Apan Desh | আপন দেশ

অটোচালক বাবা, ছেলে আরাফাত রাবির ’বি’ ইউনিটে প্রথম

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৫১, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৭:০৩, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

অটোচালক বাবা, ছেলে আরাফাত রাবির ’বি’ ইউনিটে প্রথম

আরাফাতুল ইসলাম আবদুল্লাহ

অভাবের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করেও হার মানেননি তিনি। অটোচালক বাবার ঘাম আর নিজের অদম্য পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তিতে গড়ে তুলেছেন এক অনন্য সাফল্যের গল্প। বলছি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষ 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আরাফাতুল ইসলাম আবদুল্লাহ'র কথা।

বাবা মোস্তাক আহমেদ একজন অটোচালক। দিনরাত পরিশ্রম করে পাঁচ সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণ করেন তিনি। মা রহিমা আক্তার একজন গৃহিণী। পরিবারের দিন কাটে অভাব-অনটনে। জীবনের এতো না পাওয়ার মধ্যেও সন্তানের স্বপ্ন পূরণে কোনো ছাড় দেননি তারা। জীবনের এমন পর্যায়ে আশির্বাদ হয়ে এসেছে একটি সুসংবাদ। একমাত্র ছেলে আরাফাতুল ইসলাম আবদুল্লাহর সাফল্যে প্রশংসায় ভাসছে পুরো গ্ৰাম।

বাঁশখালীর মাস্টার নজির আহমেদ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত এসএসসিতে জিপিএ ৪.৫০ আর এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। এরপর রাবির 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর ৭৭.৫০ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করছেন তিনি। পরিবারের ক্ষুদ্র আয়ের মধ্যেই করেছেন পড়ালেখা। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠলেও পড়ালেখার প্রতি প্রবল আগ্ৰহ আরাফাতে শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাফল্য এনে দিয়েছে।

নিজের অনুভূতি ব্যাক্ত করে আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খুব একটা জানতাম না। পরে সেকেন্ড ইয়ারে উঠে কলেজের শিক্ষক এবং ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানি। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো।

আরওপড়ুন<<>>জাপানের এনইএফ বৃত্তি পেলেন বাকৃবির ১০ শিক্ষার্থী

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, নামাজ, খাওয়া আর ঘুম ছাড়া পুরো সময়টা আমি পড়াশোনাতেই থাকতাম। প্রতিদিন নিয়ম করে ১২-১৩ ঘন্টা পড়ালেখা করতাম। এইচএসসির সময় থেকেই পাঠ্যবইগুলো ভালোভাবে পড়ে রেখেছিলাম। তাই ভর্তি পরীক্ষার আগে খুব একটা চাপ অনুভব করিনি।

পরীক্ষায় ছেলের প্রথম হওয়ার খবরে আবেগ আপ্লুত বাবা মোস্তাক আহমেদ বলেন, আমি একজন দরিদ্র মানুষ। আমার ছেলে এতো বড় একটা জায়গায় পড়তে পারবে, এটা আমার কাছে খুব আনন্দের। আমার ছেলে অনেক কষ্ট করেছে। আমি শুধু চেয়েছি, ও মানুষ হোক। আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতে ও আরও ভালো করবে।

প্রতিভা, প্রবল আগ্ৰহ আর পরিশ্রমের সামনে দারিদ্র্য কখনও বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না। নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের লাখো দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন আরাফাতুল ইসলাম আবদুল্লাহ।

আপন দেশ/এমএইচ 
 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়