Apan Desh | আপন দেশ

রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ৭ শতাধিক ওএমআর বাতিল

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৫০, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ৭ শতাধিক ওএমআর বাতিল

ছবি: আপন দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১৯ এপ্রিল। ফল প্রকাশিত হয় শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায়। তবে ফল প্রকাশিত হওয়ার পর জানা যায়, বৃত্ত ভরাটে সমস্যার কারণে ৭ শতাধিক ওএমআর শিট বাতিল হয়েছে।

এদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে 'বি' ইউনিটের মতো ওএমআর সংশোধনের মাধ্যমে পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল 'বি' ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৭ এপ্রিল ফল প্রকাশিত হয়। ‘বি’ ইউনিটে মাত্র ৯টি ওএমআর বাতিল হলেও 'এ' ইউনিটে এর পরিমাণ ৭ শতাধিক। কারণ হিসেবে জানা গেছে, 'বি' ইউনিটে বৃত্ত ভরাটে ত্রুটির কারণে যেসব ওএমআর বাতিল হয়েছিল, সেগুলো ম্যানুয়ালি চেক করে সংশোধন করেছিল সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কর্তৃপক্ষ। কিন্তু 'এ' ইউনিটে বৃত্ত ভরাটে ত্রুটি হলেই তা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। ম্যানুয়ালি চেক করে সংশোধন করা হয়নি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই নিয়ম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষার্থী যদি ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাটে ভুল করে থাকেন, তাহলে পরীক্ষার হলের কর্তব্যরত শিক্ষকের দায়িত্ব ছিল সেটা ঠিক করে দেয়া। কিন্তু ঠিক না করেই তিনি সিগনেচার করেন কেমনে? এখানে শিক্ষকেরও গাফিলতি স্পষ্ট।

আরওপড়ুন<<>>পরীক্ষা না দিয়েও নম্বর পেলেন ছাত্রলীগ নেতারা!

বৃত্ত ভরাটে ত্রুটির কারণে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মো. আরমান আলিফের ওএমআর বাতিল হয়েছে। তিনি বলেন, আমি একজন সেকেন্ড টাইমার ছিলাম। মাদরাসা ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আমার কোথাও চান্স হয়নি। এক বছর অফ করে সেকেন্ড টাইম প্রস্তুতি নেয়। আমার স্বপ্ন ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া। পরীক্ষাও আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়েছে। কিন্ত আমি রোববার (২৭ এপ্রিল) চেক করে দেখি আমার রেজাল্ট আসছে না। রোল ভুলের কারণে ওএমআর বাতিল হয়েছে। আমি কয়েকবার চেক দিয়েছিলাম, হলের ম্যাম চেক দিয়েছিল। এমন হওয়ার কথা না, অন্য কোথাও সমস্যা হবে। যেখানে আমি রাজশাহী নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করছি, এখানে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। শুধু বৃত্ত ভরাটের ত্রুটি কারণে আমার জীবনটা এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে?

তিনি আরও বলেন, আমার শিক্ষা লাইফটা আপনারা বাঁচান। এ হতাশা নিয়ে আমি পাগল হয়ে যাব। ইউনিভার্সিটি কপি ও সিগনেচারের খাতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রোল আছে। ওখান থেকে রোল নিয়ে ম্যানুয়ালি চেক করে ভুল সংশোধন করার আকুতি জানাচ্ছি। আমাদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ দাবি জানাচ্ছি।

ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী মাঈসা মাহাজাবিন বলেন, গত একটা বছর প্রচুর পড়াশুনা করেছি। যদি চান্স না হতো তাহলে মনকে বুঝ দিতে পারতাম। কিন্ত ওএমআরের ত্রুটির কারণে ফল বাতিল হওয়াটা আমি মেনে নিতে পারতেছি না। আমাকে বাঁচার সুযোগ দিন। আমি সারাদিন কান্না করতেছি। রাতেও ঘুম আসে না। আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, রোববার বিকেলে বিষয়টা আমি জেনেছি। এটা শিক্ষার্থীরাই ভুল করেছে। যেহেতু ওএমআর শিটের উপরে রোল নাম্বার লেখা থাকে, ওটা দেখে আমরা ঠিক করে নেয়ার চেষ্টা করি। 'বি' ইউনিটে সেটা করাও হয়েছে। 'এ' ইউনিটের সংখ্যাটা একটু বেশি। আমরা কালকে এটা নিয়ে একটা জরুরি মিটিং আহবান করেছি। সেই মিটিংয়ে এদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। 

আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়