ফাইল ছবি
ঢাকা: তালাক ইস্যুতে পরীমনি ও শরীফুল রাজ নিজ নিজ অবস্থান থেকে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাদের ভক্তকুলের কাছে অতীত ও বর্তমান চিত্র প্রকাশ করেছেন েএই দুই অভিনেতা-নেত্রী।
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে স্বামী শরিফুল রাজকে তালাক দেয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে শরীফুল রাজও মুখ খুলেছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশ গরম।
পুরোনো এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের ছবি পোস্ট করে পরীমনি লিখেছেন, নিশ্চই এই স্ট্যাটাসের কথা মনে আছে অনেকেরই। সে সময়ও রাজ পাঁচ দিনের মাথায় বাসায় ফিরে আমার ফেসবুক থেকে এটা ডিলেট করে দিয়েছিলো। তারপরও এসব ঘটনা সে পুনরাবৃত্তি করে গেছে বারবার।
পরী আরও লেখেন, সরি বলা, না খেয়ে থাকা, পা ধরে মাফ করে দাও আর হবে হবে না, এমনকি সুইসাইড এর মতো হুমকিতেও ব্লাকমেইলের শিকার হতে হয়েছে আমাকে। একই রকম ভুলের ক্ষমা কতবার করা যায় আমি জানি না।
এসব কিছুর পরেও একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক চেয়েছিলেন পরীমনি। সেটা জানিয়ে অভিনেত্রী লেখেন, আমি শুধু সব ভুলে সুন্দর স্বাভাবিক একটা পারিবারিক সম্পর্ক চেয়েছিলাম। কিন্তু সে কখনোই এই সম্পর্কটাকে ওউন করেনি। সবার সামনে আমার বউ, আমার বাচ্চা করে বেড়ানো ভয়ংকর একজন মানুষ। যে কিনা এই সম্পর্কটাকে শুধু নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে গেল প্রতিনিয়ত।
রাজকে একাধিকবার সুযোগ দিয়েছেন জানিয়ে এই তারকা লেখেন, আমি এমন ভয়ংকর একজন মানুষকে বারবার সুযোগ দিয়েছি। সেও সুযোগ পেত, কারন আইনগতভাবে তার সাথে আমার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। এসবের কারণে আমি অসন্মানিত হয়েছি আপনাদের কাছেও। আমাকে ক্ষমা করবেন।
বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে পরী লিখেছেন, আমি তাকে অফিসিয়ালি ডিভোর্স দিয়েছি। খুবই স্বাভাবিক মাধ্যমে। এটাও তাকে আমার একপ্রকার ক্ষমা করে দেয়া। না হয় সে আমার সঙ্গে যে অন্যায়গুলো করেছে, তাতে তার জেল হওয়ার কথা।
সন্তানকে নিয়ে তিনি লেখেন, আমার ছেলের যাবতীয় খরচ, মানে ভরণপোষণ থেকে আগামীতে পড়াশোনা যা কিছু আছে সব আমি বহন করবো। এতো দিন যেভাবে করেছি। বাচ্চার ফুল গার্ডিয়ান শিপ এখন তার মা’র। এ বিষয়ে যা কিছু বলার আমার আইনজীবীরা বলবেন। ধন্যবাদ।
উল্লেখ্য, শরিফুল রাজ ও পরীমনির সংসার ভেঙে গেছে ১৮ সেপ্টেম্বর। এদিন রাজকে তালাক দিয়েছেন পরী। দুই বছর পূর্ণ হওয়ার ২৯ দিন আগেই বিচ্ছেদের পথে হাটেন এই তারকা দম্পতি। বিচ্ছেদের কাগজে পরীমনি উল্লেখ করেছেন, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা ও খোঁজ-খবর না নেয়া, মনের অমিল ও মানুষিক অশান্তির কারণ।
পরীমণির আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান জানান, মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ি কাজী অফিসে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিবাহ হয়। আর যদি কেউ বিচ্ছেদ চায়, তাহলে তাকে একই নিয়মে কাজীর মাধ্যমে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। আর এই নোটিশের প্রক্রিয়া মেনেই ৩ মাস পর তালাক কার্যকর হয়। চিত্রনায়িকা পরীমনি তার সাংসারিক জীবনে অতিষ্ঠ হয়েই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। কাজীর মাধ্যমে সে তালাকলেটারটা পাঠিয়েছে।
রাজের কথা:
হুট করে আজ বুধাবার সকালে প্রকাশ্যে আসে, স্বামী শরিফুল রাজের থেকে বিচ্ছেদ চেয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। ডিভোর্স লেটারের পরী উল্লেখ করেছেন, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা, খোঁজ-খবর না নেওয়া, মনের অমিল ও অমানুষিক অশান্তির কারণ।
তবে পরীর ডিভোর্স লেটারের বিষয়ে কিছু জানেন না রাজ। তার ভাষ্য, ‘আমাদের বিচ্ছেদের বিষয়ে আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম।’ বলেই ফোনটি কেটে দেন রাজ।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে গুণী নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘গুণিন’ সিনেমার সেটে রাজের সঙ্গে পরিচয় হয় পরী। সেই বছর ১৭ অক্টোবর গোপনে বিয়ে করেন তারা। যদিও তাদের বিয়ের সংবাদটি প্রকাশ্যে আসে পরের বছর ১০ জানুয়ারিতে।
শরিফুল রাজের প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায়, হাসপাতালের বাইরে হুইলচেয়ারে বসে আছেন পরীমণি, হাতে একটি ফুল। পেছনে দাঁড়িয়ে রাজ। এরপরই জানা যায়, মা হচ্ছেন পরী। আর তখনই বেরিয়ে আসে তাদের গোপন বিয়ের সংবাদটি।
অবশেষে ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি হলুদ অনুষ্ঠানের পর ২২ জানুয়ারি রাতে জমকালো আয়োজনে শরিফুল রাজ-পরীমণির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। অতিথির তালিকায় ছিলেন তিন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম, চয়নিকা চৌধুরী, রেদওয়ান রনিসহ অনেকে। উপস্থিত ছিল দুই পরিবারের স্বজনরা। আর ২০২২ সালের ১০ আগস্ট এই দম্পতির ঘর আলো করে আসে পুত্রসন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।