ছবি: সংগৃহীত
আলোচিত-সমালোচিত মাঈনুল আহসান নোবেল। দুই বাংলাতেই গায়ক খ্যাতি পাবার পর জড়িয়ে পড়েন নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে। গানের চেয়ে বেশি আলোচিত ব্যক্তিজীবন আর নানা মন্তব্যের কারণে। তিনবার বিয়ে নিয়েও জল ঘোলা হয়েছে। এবার চতুর্থতম বিয়ের পিড়িতে বসলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে তিনটি ছবি প্রকাশ করেন নোবেল, যেখানে এক তরুণীকে আলিঙ্গনরত অবস্থায় দেখা গেছে তাকে। এর কিছুক্ষণ পরেই আরেকটি স্ট্যাটাসে নোবেল জানান, গতকাল বিয়ে করেছেন তারা। নোবেলের নতুন স্ত্রীর নাম ফারজানা আরশি। তার বাড়ি খুলনায়। পেশায় একজন ফুড ব্লগার।
জানা গেছে, আরশির এটি দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে নাদিম আহমেদ নামের এক ফুড ব্লগারের সঙ্গে সংসার করেছেন। আরশির আইডিতে এখনো নাদিমের সঙ্গে বেশ কিছু ছবি রয়েছে। নাদিমের সঙ্গে বিয়ের ছবিও এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে ফেসবুকে। তবে নাদিমের সঙ্গে আরশির বিচ্ছেদ হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। নোবেলের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। চলতি বছরের মে মাসে নোবেলের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় সালসাবিল মাহমুদের। মাদক না ছাড়ায় নোবেলকে তালাক দেন সালসাবিল। তার আগে বহুদিন ধরে থাকছিলেন আলাদা। ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর সালসাবিলকে বিয়ে করেছিলেন নোবেল। তার সঙ্গে ডিভোর্সের ছয় মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন গায়ক। নোবেল প্রথম বিয়েটা করেন রিমি নামের এক মেয়েকে। সেই সংসার বেশি দিন টেকেনি। রিমিই নাকি ডিভোর্স দিয়েছিলেন নোবেলকে। এরপর এক আত্মীয়র মেয়েকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন নোবেল। বেশি দিন টেকেনি সেই সংসারও।
এই নোবেল সেই নোবেল
পরিবহনের ব্যবসায়ির ছেলে নোবেল। কখনো খুলনা, কখনো ঢাকায় কেটেছে ছোটবেলা। একেকবার একেক পরিবেশ, একেক নিয়মকানুন, নতুন নতুন বন্ধু। এরপর নাইনে এসে আবার ভর্তি গোপালগঞ্জের একটি স্কুলে। একটা মারামারির কাণ্ডে তাকে টিসি দিয়ে বের করে দেয়। তখন তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়- দার্জিলিংয়ে। পাশের শহর কাশিয়াংয়ে হিমালি বোর্ডিং স্কুলের শিক্ষার্থী হয়ে ভর্তি হয় ক্লাস নাইনে। নোবেলের দেয়া তথ্যমতে, ‘ক্লাস নাইনেই তিনবার পড়েছি। হিমালি বোর্ডিং স্কুলে নাইন শেষ করেছি। কিন্তু আর ওখানে পড়তে ইচ্ছা করেনি। এসে ভর্তি হই কলকাতার হাজরার একটি স্কুলে। আবার নাইনে! দ্য কেমব্রিজ স্কুলের শিক্ষার্থী হয়ে পাস করি ও লেভেল এবং এ লেভেল।’স্কুল বদলাতে বদলাতে নোবেলের সঙ্গী হয়েছিল ৬০০ টাকা দিয়ে কেনা একটা পুরোনো সিগনেচার ব্র্যান্ডের গিটার। সেই গিটার নিয়ে সব জায়গায় হেঁড়ে গলায় গান গাইতেন। গান গাইবেন বলে কলকাতায় বাসা নিয়েছিলেন গলির শেষ মাথায়। নোবেল অংশ নেন জি বাংলার অডিশনে। বিচারকদের শোনান জেমসের ‘বাবা’ গানটি। ভিডিও কলের মাধ্যমে আরও কয়েকবার অডিশন দেন। তারপর পান কলকাতার টিকিট।
যতো বিতর্ক
জাতীয় সংগীত ও এর রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করার অভিযোগে বিতর্কের মুখে পড়েন নোবেল। দুই বাংলার সংগীতশিল্পী, দর্শকের কাছে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। এর আগে ও পরে আরও বেশ কয়েকবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করে সংবাদের শিরোনাম হন নোবেল। ২০২১ সালে এক সাংবাদিককে হুমকি দেয়ার অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি করা হয় তার নামে। একই বছর নির্যাতনের অভিযোগ এনে স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদও তার বিরুদ্ধে বিচ্ছেদের আবেদন করেন। এরপর আলোচিত ও সমালোচিত এই গায়ক অনেক দিন ধরেই বিনোদন অঙ্গন থেকে দূরে। দেশের উত্তর জনপদ জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান গাওয়ার সময় ‘অসংলগ্ন’ আচরণের অভিযোগ ওঠে নোবেলের বিরুদ্ধে। ক্ষুব্ধ দর্শকেরা তার দিকে পানির বোতল ও জুতা ছুড়ে মারেন। নোবেল ‘নেশাগ্রস্ত’ হয়ে মঞ্চে ওঠায় এমন হয়েছে বলে তখন জানিয়েছিলেন আয়োজকেরা। এরপর নোবেলের বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকার মতিঝিল থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা হয়। এ মামলার সূত্র ধরেই তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর ডিবির লালবাগ বিভাগ।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।