অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান
কয়েক দিন আগে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানকে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রীকে। শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে খুলে ফেলা হলো ভেন্টিলেশন। সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন অঞ্জনা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। অঞ্জনার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর। অভিনেত্রীর প্রয়াণে চলচ্চিত্রাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে এফডিসিতে অঞ্জনার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন মিশা সওদাগর।
জানা গেছে, অঞ্জনা রহমান টানা ১০ দিন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউতে অচেতন অবস্থায় ভর্তি ছিলেন। তবে তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় গত বুধবার (১ জানুয়ারি) রাতে তাকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর করা হয়।
এর আগে, হাসপাতালে ভর্তির আগের ১৫ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসা চললেও জ্বর কমছিল না। পরবর্তীতে তার রক্তে সংক্রমণ শনাক্ত হয় এবং চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
অঞ্জনা রহমান বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে এক স্মরণীয় নাম। নৃত্যশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করে চিত্রনায়িকা হিসেবে তিনি সুপরিচিতি লাভ করেন। দেশের চলচ্চিত্রের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তিনি ছিলেন পরিচিত মুখ।
অঞ্জনা সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় অভিনেত্রী হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন। তার ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয়ের কৃতিত্ব রয়েছে। অভিনয়ের জন্য অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
অঞ্জনা অভিনীত উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমা হলো খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘মাটির মায়া’, আজিজুর রহমানের ‘অশিক্ষিত’, নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘চোখের মণি’ ও ‘সুখের সংসার’, দিলীপ বিশ্বাসের ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’ ও ‘আনারকলি’, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘বিচারপতি’, শফি বিক্রমপুরীর ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, নায়করাজ রাজ্জাকের ‘অভিযান’, আলমগীর কুমকুমের ‘মহান’ ও ‘রাজার রাজা’, এফ আই মানিকের ‘বিস্ফোরণ’, আজিজুর রহমানের ‘ফুলেশ্বরী’, সত্য সাহার ‘রাম রহিম জন’, মতিউর রহমান বাদলের ‘নাগিনা’, আলমগীর কবিরের ‘পরীণিতা’।
নায়িকা অঞ্জনার প্রথম সিনেমা ‘দস্যু বনহুর’ ছিল সুপারহিট। এ ছবির পর তাকে আর ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে হয়নি। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক, বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন কয়েকবার। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।