Apan Desh | আপন দেশ

মধুবালার রূপ, সৌন্দর্যে মুগ্ধ ছিল সারা বিশ্ব

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫৯, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মধুবালার রূপ, সৌন্দর্যে মুগ্ধ ছিল সারা বিশ্ব

অভিনেত্রী মধুবালা।

ভালোবাসা দিবসে জন্ম নেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মধুবালা। ক্যারিয়ার গড়েন অভিনয়ে। তার রূপ, সৌন্দর্য আর অভিনয় গুণ মন্ত্র মুগ্ধের মতো দর্শক টানতো। তবে শুধু দর্শক নয়, মধুবালার রূপে পাগল হয়েছিলেন বিশ্বের খ্যাতিমান তারকারাও।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মধুবালার প্রেমে পাগল শুধু ভারতের খ্যাতিমান পুরুষরাই ছিলেন না, অভিনেত্রীর কারণে হৃদয় দুলেছে পাকিস্তান, চীন, সৌদি আরব, ইতালিসহ অনেক দেশের খ্যাতিমান পুরুষের।

১৯৩৩ সালে ভালোবাসা দিবস ১৪ ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন মধুবালা। তার পারিবারিক নাম মমতাজ জাহান দেহলভি। কিন্তু চলচ্চিত্র জগতে অভিনয়ে অভিষেক হওয়ার পর অভিনেত্রী দেবিকা রাণী তার নাম দেন মধুবালা।
 
খুব অল্প বয়সেই দরিদ্রতার কারণে মধুবালার পরিবার পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে আসেন। এরপর ভারতে একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন মধুবালার বাবা। শিশু শিল্পী হিসেবে বলিউডে কাজের সুযোগ করে দেন মেয়ে মধুবালাকেও।
 
শিশুশিল্পী থেকে সিনেমার নায়িকা হন ১৯৪৭ সালে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে কিংবদন্তি তারকা রাজ কাপুরের বিপরীতে প্রথম নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন ‘নীল কমল’ সিনেমায়।
 
প্রায় ২০ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে ৭০টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। মধুবালা অভিনীত কয়েকটি ছবির নাম হলো- জাওলা, শরাবী, হাফ টিকিট, বয়ফ্রেন্ড, ঝুমরু, পাসপোর্ট, বারসাত কি রাত, জালি নোট, মেহলো কি খোয়াব, মুঘল-ই-আজম, দো ওস্তাদ, ইনসান জাগ ওঠা, কাল হামারা হায়, বাঘী সিপাহী, হাওড়া ব্রিজ, কালা পানি, ফাগুন, পুলিশ, চলতি কা নাম গাড়ি, এক-সাল, গেটওয়ে অব ইন্ডিয়া।
 
তবে ক্যারিয়ারের সেরা কাজ করেছেন ১৯৬০ সালে  'মুঘল-ই-আজম'-এ। ঐতিহাসিক এ রোমান্টিক সিনেমার শুটিং দেখতে ছুটে আসতেন দেশ- বিদেশের বিখ্যাত তারকারা।
 
বলিউডের প্রখ্যাত সঙ্গীতকার নওশাদ মুম্বাইয়ে  ‘মুঘল-এ-আজম’ ছবির শুটিংয়ের কথা স্মরণ করে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘মুঘল-এ-আজম’ ছবির  'মোহে পনঘট পে নন্দলাল ছোড় গয়ো রে' গানটির শুটিংয়ে প্রতিদিন আসতেন মি. ভুট্টো। ওই গান আর মধুবালার সৌন্দর্য, অনবদ্য অভিনয় দেখতে আসতেন তিনি।
 
কথিত রয়েছে, একাধিকবার মধুবালাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। কিন্তু তখন বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মধুবালা। কেউ তখন ভাবতেই পারেননি এ ভুট্টোই একদিন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হবেন।

তৎকালীন সময়ে মুম্বাইয়ের ওরলি সি ফেস এলাকায় পারিবারিক একটা বিলাসবহুল বাংলো ছিল ভুট্টোর। প্রতিদিন মধুবালার সাক্ষাৎ পেতে এ বাংলোতেই থাকতে শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক এ প্রেসিডেন্ট।
 
তবে শুধু যে ভুট্টো মধুবালার রূপে গুণে পাগল ছিলেন এমনটা নয়। অভিনেত্রীকে এক ঝলক দেখতে ‘মুঘল-এ-আজম’র শুটিং সেটে এসেছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই, সৌদি আরবের শেখ সাউদ, পাকিস্তানের বিখ্যাত কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ, বিখ্যাত ইতালীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা রবার্তো রোসেলিনি, ডক্টর জিভাগো, লরেন্স অফ আরাবিয়ার পরিচালক ডেভিড লিনও। 
 
বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা প্রেমনাথ, দিলীপ কুমার, পরিচালক কিদার শর্মা, কামাল আমরোহী, বিখ্যাত গায়ক ও কমিডি কিং নামে খ্যাত কিশোর কুমারও প্রেমে পড়েছিলেন মধুবালার।
 
ব্যক্তিজীবনে কিশোর কুমারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মধুবালা। হৃদপিণ্ডে জন্মগত ছিদ্র থাকায় ১৯৬৯ সালে আজকের এ দিনে (২৩ ফেব্রুয়ারি) মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অপার রূপ-গুণ-সৌন্দর্যের অধিকারী ক্ষণজন্মা তারকা মধুবালা।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়