Apan Desh | আপন দেশ

পিরিয়ড অনিয়মিত? জেনে নিন ঘরোয়া সমাধান

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:১৯, ৯ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ১৫:২১, ৯ অক্টোবর ২০২৪

পিরিয়ড অনিয়মিত? জেনে নিন ঘরোয়া সমাধান

ফাইল ছবি

যে কোনো বয়সের নারীদেরই অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে যারা অবিবাহিত। সাধারণত অনেক বেশি স্ট্রেস, পরিশ্রম, দুর্বলতা, জীবনযাত্রায় বড় কোনও পরিবর্তন- এসব কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। আবার শারীরিক ত্রুটির কারণেও পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে।

পিরিয়ড নিয়মিত করতে চিকিৎসকেরা সাধারণত হরমোন থেরাপি দিয়ে থাকেন। যা আমরা খাবার পিল হিসেবে চিনি। কিন্তু এসব পিল-এর অনেক ধরনের সাইড ইফেক্ট থাকে। মোটা হয়ে যাওয়া, খাবারে অরুচি, পিম্পলস, মাথা ব্যথা, পা ব্যথা, পেট ফাঁপা ইত্যাদিসহ নানান অসুবিধা দেখা যায়।

আসুন জেনে নিই ঘরোয়া সমাধানগুলো যার মাধ্যমে ঔষধ না খেয়েও অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দূর করা যেতে পারে-

১. কাঁচা পেপে: কাঁচা পেপে পিরিয়ড রেগুলেশন-এ সাহায্য করে। এটি জরায়ুর মাসল ফাইবার কন্ট্রাকশন-এ সাহায্য করে। পর পর কয়েক মাস নিয়মিত কাঁচা পেপের রস খেলে পিরিয়ড নিয়মিত হয়। তবে পিরিয়ড চলাকালীন এটি না খাওয়াই ভালো। পিরিয়ড নিয়মিত করা ছাড়াও কাঁচা পেপে হজমে সাহায্য করে। যা ক্যানসার প্রতিরোধ করে এবং ত্বক মসৃণ রাখে।

২. কাঁচা হলুদ: হলুদ মসলা জাতীয় দ্রব্য হলেও প্রাচীন কাল থেকেই চিকিৎসা শাস্ত্রে এর ব্যবহার নানামুখী। এটি পিরিয়ড নিয়মিত করতে এবং শরীরে হরমোন ব্যাল্যান্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা হলুদ জরায়ুর মাংসপেশী সঙ্কোচন-প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ পিরিয়ড-এর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ দুধে চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ কাঁচা হলুদ নিয়ে মধু বা গুড় দিয়ে কিছুদিন খেয়ে দেখুন। পরিবর্তন নিজেই টের পাবেন।

৩. অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর শাঁস রূপচর্চার পাশাপাশি মাসিক নিয়মিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি হরমোন রেগুলেশন-এ সাহায্য করে। সব থেকে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তাজা অ্যালোভেরা পাতার রস সামান্য মধুর সাথে মিশিয়ে খান। তবে পিরিয়ড চলাকালীন না খাওয়াই ভালো।

৪. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার: পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে একটা হল রক্তে ইনসুলিন ও সুগার-এর মাত্রার তারতম্য। অ্যাপেল সিডার ভিনেগার-এর মাধ্যমে আপনি এর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে প্রতিদিন খাবার খাওয়ার আগে খেয়ে নিন। আপনার পিরিয়ড সাইকেল নিয়ন্ত্রণে এটি অনেক সাহায্য করবে।

৫. আদা: ১ কাপ পানিতে ১ চা চামচ পরিমাণ মিহি আদা কুঁচি নিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এখন এর সঙ্গে অল্প পরিমাণে চিনি বা মধু মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন খাবার খাওয়ার পর এ পানীয়টি তিন বেলা খাবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, এ পানীয়টি ভরা পেটে খেতে হবে। কয়েক মাসের মধ্যেই সুফল পাবেন। আদা পিরিয়ড সাইকেল রেগুলেশন-এ সাহায্য করে এবং অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করে।

৬. জিরা: মাসিক নিয়মিত করতে জিরা অনেক ভালো কাজে দেয়। এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ জিরা নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে এ পানি এবং জিরা দুটোই খেয়ে ফেলুন। নিয়মিত সেবন করে দেখুন, সুফল পাবেন।

৭. দারুচিনি: যে সমস্ত খাবার বহুগুণে গুণান্বিত, দারুচিনি তার মধ্যে অন্যতম। অনিয়মিত পিরিয়ড দূর করতে চা বা লেবুর রসের সাথে দারুচিনি গুড়া করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি পিরিয়ড নিয়মিত করার পাশাপাশি পিরিয়ডকালীন ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।

৮. ফল ও সবজির জুস: খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি ফল ও সবজির জুস রাখুন। এটি শরীর ঠাণ্ডা রাখে ও হরমোন রেগুলেশন-এ সাহায্য করে। যেমন গাজর, পুদিনা পাতা, করলার রস, ভিটামিন সি জাতীয় ফলের রস ইত্যাদি দিনে দু’বার করে খেতে পারেন। তবে পিরিয়ড নিয়মি করতে গাজর এবং আঙুরের রসই সব থেকে বেশি কার্যকরী।

৯. যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন: মাসিক নিয়মিত না হওয়ার প্রাথমিক কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হল স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। শরীরে যে সমস্ত হরমোন পিরিয়ড নিয়ন্ত্রণ করে স্ট্রেস এর কারণে সেগুলোর ব্যাল্যান্স নষ্ট হয়। যার ফলে ঠিকমত পিরিয়ড হয় না। যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে। পিরিয়ড নিয়মিত করতে সব থেকে উপযোগী পদ্ধতিগুলোর মধ্যে এ দুটি অন্যতম।

আপন দেশ/কেএইচ

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়