
প্রতীকী ছবি
চরম জনবলসংকটে ভোগছে স্বাস্থ্য খাত। এখাতে প্রায় ৭৮ হাজার পদ শূন্য আছে। এ পরিস্থিতিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। জনবল যা আছে, তার বণ্টন ঠিকভাবে হচ্ছে না। ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য জনবল কৌশলপত্র-২০২৪’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সহায়তায় এ কৌশলপত্রটি তৈরি করা হয়েছে।
কৌশলপত্রে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ে মোট ৩৩ শ্রেণির পদ রয়েছে। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ৩২ শতাংশ পদ। এসব শ্রেণিতে মোট পদের সংখ্যা দুই লাখ ৪৪ হাজার ৭১১টি। এর মধ্যে এক লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৪ পদে জনবল আছে। আর পদ শূন্য আছে ৭৭ হাজার ৮৭৭টি।
ওইপত্রে আরও বলা হয়, শূন্য পদের হার সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। এ বিভাগে ১৫ হাজার ৯৭৬টি পদের বিপরীতে শূন্য পদ চার হাজার ২২৬টি। যা মোট পদের ২৬ শতাংশ। আর শূন্য পদের হার সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে। এ বিভাগে পদ আছে ১৪ হাজার ৫৩৬টি; এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৮২৭ পদেই কোনো জনবল নেই, যা মোট পদের ৪০ শতাংশ।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শ্রেণিতে শূন্য পদের হার সবচেয়ে বেশি। এটি ৬২ শতাংশ। চিকিৎসকদের পদ খালি ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ৪০ শতাংশ পদে জনবল নেই।
কৌশলপত্র বলছে, জনবল সংকটের কারণে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়তে হয় সেবা গ্রহণকারী সাধারণ মানুষ বা রোগীদের। বাড়তি কাজের চাপ পড়ে নার্স, চিকিৎসকদের ওপর। চিকিৎসকদের মধ্যে বাড়তি চাপ সবচেয়ে বেশি পড়ে মেডিসিন, শিশুস্বাস্থ্য, অবেদনবিদ (অ্যানেসথেটিস্ট), স্ত্রীরোগ ও শল্যচিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের ওপর। এ ছাড়া নার্সিং সেবা সংশ্লিষ্টদের এ কাজের বাইরেও অন্য কাজও করতে হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা কৌশলপত্রে দেয়া বার্তায় বলেছেন, প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ মিলে মোট ৪৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীর একটি দল প্রয়োজন। এটিই বৈশ্বিক মানদণ্ড। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য আছেন মাত্র ১৩ জন চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ।
বর্ধন জং রানা আরও বলেছেন, জনবল যা আছে, তার বণ্টন ঠিকভাবে হচ্ছে না। বিভিন্ন শ্রেণির জনবলকে একসঙ্গে কাজ করানোর ক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা আছে। পেশার ক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রগতির সুযোগ সীমিত এবং অনেকের কাজের চাপ বেশি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এগুলো এ দেশের স্বাস্থ্য খাতের দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জ বলে মত তার।
আপন দেশ/এবি