-ফাইল ছবি
ঢাকা: রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক শিক্ষার্থীকে (১৮) শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক বরাবর এই চিঠি দেন তিনি। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বাবা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতালের পরিচালক বরাবর জমা দেওয়া চিঠিতে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসা নিতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। আমি সিরিয়ালে থাকাকালীন এক চিকিৎসক এবং তার সঙ্গে এক আনসার সদস্য এসে বলেন- চারদিনের বেশি যাদের জ্বর তাদের টিকিট জমা দিন। তখন আমি এবং আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন টিকিট জমা দেই। সবার মধ্যে থেকে আমাকে ডেকে নিয়ে চিকিৎসক বলেন- আমার সঙ্গে কেবিনে এসে আমাকে একটু বিপি লিখে সাহায্য করো। কারণ আজ আমার সহকারী নেই। বাকিদের অন্য রুমে পাঠান তিনি।’
‘কেবিনে গেলে চিকিৎসক আমাকে জিজ্ঞাসা করেন আমি কোন শ্রেণিতে পড়ি। তখন আমি আমার পরিচয় জানালে তিনি বলেন- তুমিতো পড়াশোনা করো, তাই তুমি আমার সঙ্গে বসে যেসব রোগীর প্রেসার আছে তাদের বিপি লিখে দাও এবং বলো সামনের রুমে গিয়ে অপেক্ষা করুন। তার কথামতো আমি আনুমানিক ২ ঘণ্টা তাকে সাহায্য করি। এরপর তিনি আরও বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে আমাকে দিয়ে লেখান।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এভাবে কাজ করার সময় ওই চিকিৎসক আমার হাত ধরেন এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেন। এভাবে তিনি আমাকে বিরক্ত করতে থাকেন। আমি বিরক্ত হয়ে চলে আসতে চাইলে তিনি আমার হাত ধরে চেয়ারে টেনে বসিয়ে খারাপ আচরণ করেন। এরপর আমি কান্নাকাটি শুরু করলে আমার মা আরও লোকজন নিয়ে ওই কেবিনের দরজার সামনে কান্নাকাটি করেন। তখন কেবিনের বাইরে থাকা দারোয়ান বলেন- এই রুমে আপনার মেয়েকে নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় আমার উচ্চস্বরে কান্নাকাটি দেখে চিকিৎসক অশালীন ভাষায় বকাবকি করতে থাকেন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে দারোয়ানকে দরজা খুলে দিতে বলেন এবং তাকে পালাতে সাহায্য করতে বলেন।’
ওই শিক্ষার্থী আরও অভিযোগ করেন, ‘অভিযুক্ত চিকিৎসক মাস্ক পরে পালাতে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে ধরে দায়িত্বরত আনসার সদস্যর কাছে হস্তান্তর করে। এ অবস্থায় বিষয়টির তদন্ত করে বিভাগীয় বিচারের আবেদন করছি।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমরা হাসপাতালের পরিচালককে চিঠি দিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন এর সুষ্ঠু বিচার করবেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে উল্টো আমার মেয়ে এখন মানসিক ট্রমার মধ্যে চলে গেছে।
এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. খলিলুর রহমান বলেন, অফিস টাইমে হাসপাতালের আউটডোরে শত-শত রোগী থাকেন। কিন্তু এই আউটডোরেই এক রোগীর সঙ্গে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল! এটা কেন যেন আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। কারণ আউটডোরে একাধিক মানুষ থাকে, এখানে রোগীরা আসে। একদম অফিস টাইমে এই জায়গায় ধর্ষণচেষ্টার মতো কোনো ঘটনা তো ঘটতেই পারে না।
তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের হাসপাতালের গাইনি বিভাগের এক অধ্যাপককে প্রধান করে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলেই বলতে পারব আসল ঘটনা কী। তাদের আমরা সাত দিনের সময় দিয়েছি।
আপন দেশ/এমএমজেড