Apan Desh | আপন দেশ

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস আজ 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:১৫, ৩০ আগস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস আজ 

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস আজ বুধবার (৩০ আগস্ট)। সারা পৃথিবীতে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে দিবসটি পালিত হচ্ছে আজ। 

২০১০ সালের ডিসেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অব অল পারসন্স এগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়্যারেন্স’ সম্মেলনে যে আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয় তাতে ৩০ আগস্টকে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস বলে ঘোষণা করা হয়।

২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর ৩০ আগস্ট গুম হওয়া মানুষগুলোকে স্মরণ এবং সেই সঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। আর গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পাশাপাশি আছেন সাধারণ লোকজনও।

প্রতিবারের মতো বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে বিশেষ বাণী।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানিয়েছে, গত দুই বছরে কেউ গুমের শিকার হয়নি। গত বছর পাঁচ জন গুম হয়েছিল, এর মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর একজনকে অপহরণের পর ছেড়ে দেয়া হয়। আর এবার ছয় জন গুম হয়েছিল। এদের সবাই পরে ফিরে এসেছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে ৭০ ও ৮০-র দশকে কেবল অবৈধ অস্ত্র কারবারি ও ভিন্ন মতাবলম্বীরাই গুম হতেন। কিন্তু বর্তমানে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী, মাদক কারবারি ও মানব পাচারকারীদের মধ্যেও গুমের ঘটনা দেখা যায়।

আসক গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ স্বাক্ষর এবং এ সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে আসক জানিয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ১২ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ১১ জন ফেরত এসেছেন। গত পাঁচ বছরে ১১ জন গুম রয়েছেন।

এর আগে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৬০৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনরা অভিযোগ তুলেছেন। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৭৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, ৮৯ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ৫৭ জন ফেরত এসেছেন। এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবার, স্বজন বা প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, বিশেষ বাহিনী- র্যা ব, ডিবি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের পরিচয়ে সাদা পোশাকে ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের তুলে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট বাহিনী তাদের গ্রেফতার বা আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে।

আসকের দাবি, গুমের শিকার সকল নিখোঁজ ব্যক্তিকে অনতিবিলম্বে খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। প্রতিটি গুমের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করতে হবে। গুম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ স্বাক্ষর করতে হবে। গুমের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলোকে অস্বীকার না করে এ ধরনের ঘটনার বিচার নিশ্চিতে বিদ্যমান আইন কাঠামোতে পরিবর্তন করতে হবে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ সারা দেশে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছিল বের করবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

এ ছাড়া মঙ্গলবার বিকালে সূত্রাপুর ও বংশাল এলাকায় গুম হয়ে যাওয়া বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দলের নেতারা। 

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, মানুষকে খুন করলেও তার মরদেহ দেখে অন্তত কিছুটা স্বস্তি পান স্বজনরা, কেঁদে মন হালকা করতে পারেন। কিন্তু গুম এমন একটি জিনিস তার মরদেহটিও  পাওয়া যায় না। এটি যে কী নিদারুণ কষ্ট তা ভুক্তভোগীর পরিবার ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারে না। এর চেয়ে ঘৃণিত ও জঘন্যতম অপরাধ এই পৃথিবীতে আর কিছু নেই।

আপেন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়