ছবি: সংগৃহীত
আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে একের পর এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও শত শত মানুষ। রোববার (৮ অক্টোবর) তালেবান মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান কর্মকর্তা বলেন, নিহতদের সংখ্যা অনেক। এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে। আমরা মানুষকে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে উল্লেখযোগ্য হতাহতের শঙ্কা রয়েছে। দুর্যোগটি ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।
ইউএসজিএস ওয়েবসাইটে পোস্ট করা একটি মানচিত্রে আফগানিস্তান অঞ্চলে সাতটি ভূমিকম্পের কথা জানানো হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হেরাত থেকে ২১ দশমিক সাত মাইল উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে পাঁচ দশমিক নয় মাত্রার ভূমিকম্প, জিন্দাজান থেকে ২০ দশমিক পাঁচ মাইল উত্তর-উত্তর-পূর্বে ছয় দশমিক তিন মাত্রার ভূমিকম্প এবং হেরাত শহর থেকে প্রায় ২৬ মাইল পশ্চিমে জিন্দাজানের ১৮ মাইল উত্তর-উত্তর-পূর্বে আরেকটি ছয় দশমিক তিন মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হেরাতের বাসিন্দা ও দোকানদাররা ভবন থেকে রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় তাড়াহুড়ো করে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন।
হেরাতের ৪৫ বছর বয়সী এক বাসিন্দা বশির আহম এএফপিকে বলেন, আমরা অফিসে ছিলাম। সেই সময় ভবন কেঁপে ওঠে। দেয়ালের প্লাস্টার খুলে নিচে পড়ে যায় এবং দেয়ালে ফাটল ধরে। ভবনের কিছু অংশ ধসে পড়ে। তিনি আরও বলেন, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমি খুব চিন্তিত এবং ভীত। এটি অত্যন্ত ভয়াবহ ব্যাপার।
আরও পড়ুন <> আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২০
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, হেরাত প্রদেশের রাজধানী হেরাত শহরে ১৯ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে। হেরাতের পূর্বাঞ্চলে ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে ইরানের সঙ্গে। এই শহরটিকে আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে মনে করা হয়।
এর আগে গত বছরের জুনে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাঁচ দশমিক নয় মাত্রার এক ভূমিকম্পে এক হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। গত কয়েক দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে সেটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প ছিল বলে সেই সময় জানায় দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া চলতি বছরের মার্চে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় সাড়ে ছয় মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পে দুই দেশে অন্তত ১৩ জন নিহত হন।ৎ
মূলত হিন্দুকুশ পর্বতমালা ও ইউরেশীয়-ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে অবস্থান হওয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তান।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।