ছবি : সংগৃহীত
ভারতের হিন্দু অধ্যুষিত উত্তর প্রদেশের শহর অযোধ্যায় আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) উদ্বোধন হচ্ছে প্রায় দুই হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত রামমন্দির। মন্দিরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে অযোধ্যায় এখন সাজসাজ রব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামমন্দিরের উদ্বোধন করবেন। তার হাত দিয়ে রামলালার বিগ্রহে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হবে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে অযোধ্যায় পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রামমন্দির উদ্বোধনের পর মোদি অযোধ্যায় একটি জনসভাও করবেন। সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে অযোধ্যার বাল্মীকি বিমানবন্দরে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে অযোধ্যার হেলিপ্যাডে পৌঁছবেন ১০টা ৪৫ মিনিট নাগাদ। ১০টা ৫৫ মিনিটে রামমন্দির প্রাঙ্গণে পৌঁছে যাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার পরে শুরু হবে উদ্বোধন অনুষ্ঠান। ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিনি রামমন্দিরের ভেতরেই থাকবেন।
রামলালার বিগ্রহে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র আচার অনুষ্ঠান শুরু হবে ১২টা ৫ মিনিটে। টানা ৫০ মিনিট ধরে অনুষ্ঠান চলবে। ১২টা ৫৫ মিনিটে সব আচার অনুষ্ঠান সেরে উদ্বোধনস্থল ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রামমন্দিরের কাছেই প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। দুপুর ১টার মধ্যে তিনি সেখানে পৌঁছে যাবেন। ২টা পর্যন্ত চলবে সভা। জনগণের উদ্দেশে সেই সভা থেকেই প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। এরপর অযোধ্যার গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান কুবের টিলায় যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর।
রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে আগেই সরকারের পক্ষ থেকে অর্ধদিবসের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তারপর ছুটি ঘোষণার ক্ষেত্রে একই পথে হেঁটেছে বিজেপিশাসিত অধিকাংশ রাজ্য। তবে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে থাকা বেশ কিছু শরিক দল যেসব রাজ্যে ক্ষমতায়, সেসব রাজ্যের অনেকগুলোতেই ছুটি ঘোষণা করা হয়নি। মূলত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে এই প্রবণতা দেখা গেছে। অন্যদিকে, বিরোধীশাসিত তিনটি রাজ্যও রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র দিন ছুটি ঘোষণা করেছে। কোথাও অর্ধদিবস তো কোথাও পুরো দিন ছুটির ঘোষণা করা হয়েছে।
অযোধ্যা পুলিশ জানিয়েছে, অনুষ্ঠান ঘিরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিস্তৃত পরিসরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ড্রোনের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে।
পুলিশের লক্ষ্ণৌ জোনের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) পীযূষ মোর্দিয়া বলেন, সরযূ নদীতে নৌকার মাধ্যমে টহল দেয়া হচ্ছে।
রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত সাত হাজার জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও লোকসভার বিরোধী নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকেও ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
তবে এ অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। এ ছাড়া শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিও জানিয়ে দিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানে তারা যাবেন না।
মোগল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাঁকি ১৫২৮ সালে অযোধ্যায় মসজিদ তৈরি করেন, যা পরবর্তী সময়ে বাবরি মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। তবে হিন্দুদের দাবি, রাম জন্মভূমিতে ‘রামের মন্দির ভেঙে’ মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকদের হামলায় মসজিদটি ধ্বংস হয়। এরপর ২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত জমির মালিকানার রায় মন্দিরের পক্ষে দেন। সেখানেই গড়ে তোলা হয় রামমন্দির।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।