ছবি: রয়টার্স
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনকে ঘিরে ইমরান খানের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশে বিধিনিষেধে অভিযোগ তুলেছে কয়েকজন সাংবাদিক। কার্যত, ইমরান খান এখন দেশটির ণমাধ্যমে 'নিষিদ্ধ' একটি নাম। এই অভিযোগ তার দল পিটিআই’র বিরুদ্ধেও।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।
লাহোরভিত্তিক বেসরকারি নিউজ চ্যানেলের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সাংবাদিক আমির মেহমুদ (ছদ্মনাম)। গত মঙ্গলবার তার হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পান। যা দেশটির প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা পাঠিয়েছেন।
মেহমুদ আল-জাজিরাকে বলেন, “মূলত, তিনি আমাদের চ্যানেলে নির্বাচন বিষয়ে প্রচারিত কিছু অনুষ্ঠানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমরা যেন আগামীতে পিটিআইর পতাকা না দেখাই, বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র নিয়ে কিছু উল্লেখ না করি। তিনি নির্দেশ দেন, এ ধরনের প্রার্থীদের পিটিআই সমর্থিত না বলে ‘স্বতন্ত্র’ বলতে হবে। তারা কোন দলের সমর্থন পাচ্ছেন, তা উল্লেখ করা যাবে না।”
আরও পড়ুন>> ‘সরকার তথ্যের অবাধ স্বাধীনতা চায়’
তার মতো একই ভাষার বার্তা পেয়েচেন দেশটির বেশ কিছু সাংবাদিক। বিষয়টি আল-জাজিরা নিশ্চিত করেছেন তারা।
হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাওয়ার পর মেহমুদ বিষয়টি নিয়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। শিগগির চ্যানেলটির সব ধরনের ভিজুয়াল, গ্রাফিক্স, আলোচনা-সূচি থেকে পিটিআইর নাম বাদ দেয়া হয়। এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শুধু স্বতন্ত্র বলে অভিহিত করা হয়।
আল-জাজিরা সাত সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছে। পরিণামের আশংকায় একজন ছাড়া বাকি সবাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেন। মেহমুদসহ আরও তিনজন নিশ্চিত করেন, তাদেরকে পিটিআই’র পতাকা বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে দলটির যোগসূত্র নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
তবে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুরতাজা সোলাঙ্গি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আল-জাজিরাকে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় জানান, ‘আমরা এ ধরনের কোনো নির্দেশ দেইনি’।
সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম উইং (আইএসপিআর) ও এ বিষয়ে আল-জাজিরার প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক তারকা ক্রিকেটার ও অধিনায়ক ইমরান খান। তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল গঠন করেন। বিশ্লেষকদের মতে, পিটিআই পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। তবে আগস্ট ২০২৩ থেকে কারাগারে বন্দি ইমরান। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে। ইমরান উভয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন>> ‘প্রেসিডেন্ট’ আলোচনায় ট্রাম্প-বাইডেন
২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন ইমরান। এরপর থেকে ইমরানের দলের বিরুদ্ধে চলছে দমন-পীড়ন। পিটিআইর হাজারো সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। কয়েকশ’ নেতা দল ছাড়তে বাধ্য হন। অভিযোগ আছে, সামরিক বাহিনীর চাপে অনেকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
ইমরান খান ও পিটিআইর অধিকাংশ নেতার মনোনয়নপত্র নাকচ করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। এমনকি দলের নির্বাচনী প্রতীকও (ক্রিকেট ব্যাট) বাতিল করেছে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখেছে। ফলে পিটিআইর অনেক নেতাকে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।