ছবি: আনন্দবাজার
পাথরের ডিম! শুনতে সোনার পাথরবাটির মতো। তবে বাস্তবেও এই ডিমের অস্তিত্ব রয়েছে। লোককথা, এই ডিম নাকি সৌভাগ্য ফিরিয়ে আনে। কোথায় পাওয়া যায় এই ডিম? ‘পাথরের ডিম পাড়া’ পাহাড়ের ঠিকানাই বা কোথায়?
চীনের গুইঝোউ প্রদেশের গুলু ঝাই গ্রামের রয়েছে গানডেং পাহাড়। প্রায় ৫০ কোটি বছরের পুরনো। এই পাহাড় নির্দিষ্ট সময় অন্তর ‘পাথরের ডিম’ পাড়ে। গানডেং পাহাড়ে ৬ মিটার চওড়া ও প্রায় ২০ মিটার উঁচু একটি দেয়াল রয়েছে। প্রতি ৩০ বছর অন্তর এই দেয়াল থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে ‘পাথরের ডিম’।
পাথর দিয়ে তৈরি হলেও পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই ‘ডিমের’ আকৃতি সম্পূর্ণ গোলাকার। এক নজর দেখে মনে হয় যেন কেউ হাত দিয়ে নকশা গড়ে দিয়েছে। সাধারণত গানডেং পাহাড়ের গায়ে ‘ডিম’গুলো আটকে থাকে। আকার-আয়তনে পরিণত হলে সেই পাথরগুলো মাটিতে আছড়ে পড়ে। তখন দেখলে মনে হয়, পাহাড় যেন ‘পাথরের ডিম’ পাড়ছে।
আরও পড়ুন>> বর ছাড়াই বিয়ে করলেন কনেরা!
পাথরের ডিমগুলো বেশ ভারী এবং শক্ত। মাটিতে আছড়ে পড়ার পরেও সেগুলো ভেঙে যায় না।
স্থানীয়দের মতে, গানডেং পাহাড়ের সঙ্গে ‘দৈব ক্ষমতা’ জড়িয়ে রয়েছে। যার ফলে পাহাড়ের গা থেকে ‘পাথরের ডিম’ আছড়ে পড়ে। এই ডিমগুলো সৌভাগ্যও ফিরিয়ে আনে। এমনটাই ধারণা তাদের।
৩০ বছর অন্তর গানডেং পাহাড় ‘ডিম’ পাড়ে। পরে ‘ডিমগুলো’ সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে যান। তাদের দাবি, বাড়িতে এই পাথর রাখলে তা সৌভাগ্য নিয়ে আসে। ‘পাথরের ডিমের’ পরিধি ২০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক ২৭২ কেজির ‘ডিম’ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের দাবি, গানডেং পাহাড় থেকে সংগৃহীত ‘ডিমগুলো’র মধ্যে ৭০টি এখনও সংরক্ষিত আছে। বাকি ‘ডিমগুলো’ চুরি হয়েছে। গানডেং পাহাড়ের সঙ্গে অলৌকিক ক্ষমতা জুড়ে রয়েছে বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস। তবে ভূতত্ত্ববিদেরা এই ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
চুনাপাথর দিয়ে নির্মিত ৫০ কোটি বছরের পুরনো গানডেং পাহাড়টি ক্যাম্ব্রিয়ান যুগের। ৩০ বছর ধরে পাহাড়ের গায়ে ক্যালসিয়াম কার্বনেট জমা হতে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে জমা হতে থাকার পর পাথরগুলো ভারী হয়ে গানডেং পাহাড় থেকে পড়ে যায়। পাথরগুলো গোলাকার হওয়ার জন্য ডিমের মতো দেখতে লাগে।
ভূতত্ত্ববিদের একাংশের মতে, সমআয়তনের পাথর হলেও বৃত্তাকার এলাকা সবচেয়ে কম জায়গা দখল করে থাকে। গানডেং পাহাড়ের মতোই উত্তর চীনের বেইদাইহে, উত্তর-পশ্চিম চীনের শিন জিয়াং প্রদেশেও এই ধরনের ‘পাথরের ডিম’ পাওয়া যায়। নানা রকম বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিলেও কোনও তথ্যই আজও প্রমাণিত হয়নি। ‘পাথরের ডিমের’ রহস্য এখনও অন্তারালেই রয়েছে।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।