ফাইল ছবি
পর্নো তারকার সঙ্গে কেলেঙ্কারির মামলা চলমান অবস্থায় এবার জালিয়াতির মামলায় ফাঁসলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নিজের সম্পদের মূল্য বাড়িয়ে দেখিয়ে ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা করেছেন নিউইয়র্কের একটি আদালত। একই সঙ্গে নিউইয়র্কে ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের ব্যবসাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স, সিএনএনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতের বিচারক আর্থার অ্যাঙ্গরন এই রায় ঘোষণা করেন। জরিমানার পাশাপাশি বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী তিন বছর নিউইয়র্কের কোনো প্রতিষ্ঠানে পরিচালক বা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিতে পারবেন না ট্রাম্প।
তবে বরাবরের মতো এবারো জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে উচ্চ আদালত মামলাটি পর্যালোচনা না করা পর্যন্ত এই রায় স্থগিত থাকবে। আর আপিল চলাকালে ট্রাম্প জরিমানা বা ব্যক্তিগত সম্পদ জব্দ এড়াতে চাইলে তাকে ৩০ দিনের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
রায়ে বিচারপতি অ্যাঙ্গরন বলেছেন, ট্রাম্প ও এই মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা নিজস্ব উপায়ে তাদের অভিযোগ স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়েছেন। রায়ে বিচারক আরও উল্লেখ করেন, ‘তাদের অনুশোচনার অভাব আছে। তাদের মতে, তারা নিজেদের কোনো ভুল দেখেন না, শোনেন না এমনকি তারা কোনো ভুলও বলেন না।’
এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। ট্রাম্পের পারিবারিক কোম্পানি ‘ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের’ বিষয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিষয়ে মিথ্যা বলার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্তের পর নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিয়া জেমস এ মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন <> পাকিস্তানের নির্বাচন বাতিলের দাবি সুপ্রিম কোর্টে
এই মামলায় ট্রাম্পের পাশাপাশি তার তিন সন্তান ডোনাল্ড জুনিয়র, ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও এরিক ট্রাম্পকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের দুই নির্বাহী অ্যালেন ওয়েইসেলবার্গ ও জেফরি ম্যাককনিকেও আসামি করা হয়েছে। লেটিয়া জেমস ও তার প্রতিষ্ঠান মিলে গত তিন বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তথ্য জালিয়াতির প্রমাণাদি সংগ্রহ করেছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রতিষ্ঠানের সম্পদ কমিয়ে দেখাতে দুই শতাধিক ভুয়া মূল্যায়ন এবং আর্থিক বিবরণী তৈরি করেছিলেন। ঋণ প্রাপ্তি ও কম ট্যাক্সের সুবিধা পেতে ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পত্তির আর্থিক মূল্য নিয়ে এসব মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। মামলার কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, ২০১১-২১ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি আরও অসংখ্য জালিয়াতি করেছে।
তদন্ত শেষে ট্রাম্পের কোম্পানির ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সম্পত্তির অতিরিক্ত মূল্য দেখানো, আবার সেই সম্পত্তিরই দাম কম দেখিয়ে আয়করে ছাড় পাওয়া, ব্যবসায়িক রেকর্ড, বীমা জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে বিচার কাজ শুরু করেন আদালত।
বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বিচারকের কাছে ট্রাম্পকে জরিমানা করার পাশাপাশি নিউইয়র্কে যেন তিনি ব্যবসা করতে না পারেন, সেই আবেদনও জানিয়েছিলেন।
বেশ কয়েকটি ফৌজদারি অপরাধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।