Apan Desh | আপন দেশ

জাপান শান্তির পথ ছেড়ে অস্ত্রের বাজারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০৩, ২৭ মার্চ ২০২৪

জাপান শান্তির পথ ছেড়ে অস্ত্রের বাজারে

ছবি: সংগৃহীত

শান্তিবাদী নীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। ২০২৭ সালের মধ্যে সামরিক খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছে। এজন্য চীন ও উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির কথা উল্লেখ করেছে দেশটি। তাই এবার নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনাতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না জাপান। রীতিমতো সারা বিশ্বে বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বে মারণাস্ত্র রফতানির উদ্যোগ শুরু করেছে।

শান্তিবাদী নীতি থেকে সরে আসার সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে জাপানের মন্ত্রিসভা যুক্তরাজ্য ও ইতালির সঙ্গে নির্মিতব্য নতুন যুদ্ধবিমান রফতানির অনুমোদন দিয়েছে।

মন্ত্রিসভা অস্ত্র রফতানির নিয়মনীতি সহজ করার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে প্রতিরক্ষা চুক্তিবদ্ধ দেশগুলো ও যেখানে চলমান কোনো সংঘাত নেই সেসব দেশের কাছে যুদ্ধবিমান বিক্রির অনুমতি দেয়া যায়। প্রতিটি যুদ্ধবিমান রফতানির জন্য মন্ত্রিসভার আলাদা অনুমোদন লাগবে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাপান একটি যুক্তরাজ্য–ইতালি সহযোগিতা প্রকল্পে যোগ দেয়, যাকে বলা হয় ‘টেম্পেস্ট’। যৌথ উদ্যোগের এ নতুন যুদ্ধবিমানে পাইলটদের সহায়তা করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উন্নত সেন্সর ব্যবহার করা হবে।

২০৩৫ সালের মধ্যে জেটগুলো প্রস্তুত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এটিই হবে পশ্চিমের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে টোকিও’র প্রথম প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উন্নয়ন অংশীদারিত্ব।

জাপানের মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিমান রফতানির এ প্রস্তাব পাসের পদক্ষেপটি এমন সময় এলো, যেখানে আগামী এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি সফরে যাচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার। এ সফরে তিনি ওয়াশিংটনের সঙ্গে টোকিওর জোট ও প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে আরও সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুতির ওপর জোর দেবেন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী কিশিদা বলেছিলেন, ভবিষ্যতে অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রকল্পে অংশীদার হিসেবে টোকিও’র বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে তৃতীয় দেশে যুদ্ধবিমান রফতানির অনুমতি দেয়া ‘প্রয়োজনীয়’।

২০২৭ সালের মধ্যে সামরিক খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করবে জাপান। ছবি: সংগৃহীত

জাপান সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিমাসা হায়াশি মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনাটি অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে, আমাদের দেশের প্রতিরক্ষার সঙ্গে আপস করা হবে না।’

তবে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মিনোরু কিহারা স্পষ্ট করে বলেছেন, জাপান এখনো যুদ্ধাস্ত্র রফতানির ক্ষেত্রে ‘কঠোর প্রক্রিয়ার’ মধ্য দিয়ে ‘একটি শান্তিবাদী জাতির মৌলিক দর্শন’–এর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয় স্বীকার করে নেয়ার পর মার্কিন–অধিকৃত জাপানকে একটি শর্ত মেনে সেটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য করা হয়। তার তাতে বলা হয়, জাপান আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য যুদ্ধ ও সমরশক্তির ব্যবহার পরিহার করবে। জাপানের সংবিধান আনুষ্ঠানিক সামরিক বাহিনীকে স্বীকৃতি দেয় না। সামরিক শক্তিকে আত্মরক্ষার ক্ষমতার মধ্যে সীমাবদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।

জাপানের সংবিধানে অস্ত্র রফতানি নিষেধাজ্ঞাও ছিল। তবে ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অধীনে প্রথমবারের মতো সেই বিধান শিথিল করা হয়।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জাপান বিদেশি লাইসেন্সের অধীনে তৈরি করা মারণাস্ত্র বিক্রির অনুমতি দেয়ার জন্য বিধিবিধানগুলো আরও শিথিল করেছে। এতে লাইসেন্সধারী দেশে অস্ত্র রফতানির অনুমতি দেয়া হয়।

এ বিধির শিথিল টোকিও’র জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার পথ প্রশস্ত করে। প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা সবচেয়ে উন্নত অস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়