ফাইল ছবি
উত্তর প্রদেশে মাদরাসা বন্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্ব গঠিত একটি বেঞ্চ এ রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের এ সিদ্ধান্তে স্বস্তি পেয়েছে ওই রাজ্যের ১৬ হাজার মাদরাসার ১৭ লাখ মাদরাসা শিক্ষাথী। সরকারি অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রেও মাদরাসাগুলোর জন্য কোনো বাধা রইলো না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ বলেন, মাদরাসা বোর্ডের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ লঙ্ঘন করছে বলে এলাহাবাদ হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, প্রাথমিকভাবে তা সঠিক নয়।
ভারতের প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, মাদরাসায় মানসম্পন্ন শিক্ষা দেয়া হয় না, এমনটি বলা ভুল। আবার মাদরাসা সর্বজনীন ও বিস্তৃত নয় এমনটিও বলা যাবে না। এছাড়া মাদরাসা বন্ধ করে দেয়ার যে নির্দেশ এলাহাবাদ হাইকোর্ট দিয়েছে, সেটি বৈষম্যমূলক রায়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে সুপ্রিম কোর্টের এ নির্দেশ সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার ও শাসকদল বিজেপিকে বিড়ম্বনায় ফেললো। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের এ নির্দেশের ফলে মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে ‘মূল স্রোতে’ অন্তর্ভুক্ত করার যে প্রক্রিয়া উত্তর প্রদেশ সরকার শুরু করেছিল, তা স্থগিত হয়ে গেল। সেই সঙ্গে সরকারি অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রেও মাদরাসাগুলোর কোনো বাধা রইলো না।
এদিকে, মাদরাসা বন্ধে কেন এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল, সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রদেশ সরকারকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাঠানো হয়েছে নোটিশ। এ বিষয়ে শুনানির জন্য জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই পর্যন্ত এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে ও মাদরাসাগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারবে।
চলতি বছরের ২২ মার্চ এলাহাবাদ হাইকোর্ট উত্তর প্রদেশে ২০০৪ সালে চালু হওয়া মাদরাসা বোর্ড শিক্ষা আইনকে ‘অসাংবিধানিক ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের পরিপন্থী’নির্দেশ দেন ও রাজ্য সরকারকে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভূক্ত করার নির্দেশ দেন।
এলাহাবাদ হাইকোর্টে সেই আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ অংশুমান সিংহ রাঠৌর। আবেদনকারী পক্ষের দাবি ছিল, ওই আইন অবৈধ। ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধরি এবং বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থীর বেঞ্চ সেই আবেদনে সাড়া দেওয়ার ফলে উত্তর প্রদেশে অনুমোদনপ্রাপ্ত মাদরাসাগুলোর সরকারি অনুদান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।