ফাইল ছবি
ভারত-বাংলাদেশ ভূ-রাজনীতির বড় নিয়ামক হয়ে আছে তিস্তার পানি বণ্টন। তিস্তার পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ভারত বাঁধ দিয়েছে। ফলে বছরের পর বছর খেসারত দিচ্ছে এ দেশের উত্তরের জনপদ। শুধু বাংলাদেশই নয়, এ নদীর পানি বণ্টন নিয়ে বিবাদ রয়েছে ভারতেরই বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে।
হড়পা বানে গত বছরের অক্টোবরে তিস্তার ভয়াবহ রূপ দেখেছিল সিকিম। তিস্তার বানে আগেও ভেসেছে এ রাজ্য ও তার আশপাশ। এরই মধ্যে ভারতের জন্য নতুন দুশ্চিন্তা হয়ে আবির্ভূত হয়ে তিস্তার গতিপথের বড় পরিবর্তন; যার ফলে বন্যার আগাম প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বিপত্তির মধ্যে পড়েছে দেশটির সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার তিস্তার বুকে বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ক্রমেই বদলাচ্ছে নদীটির গতিপথ। ইতোমধ্যে একাধিক জায়গায় এ গতিপথ বদলে যাওয়া চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের জন্য। দেশটির সেচ দপ্তর বলছে, সামনে বর্ষা এলেই ফুঁসে উঠবে তিস্তা। তখন কোথায় কী হয় সেটা আগে থেকে আঁচ করা মুশকিল।
আরও পড়ুন>> গঙ্গার পানি চুক্তির রিভিউ চান স্থানীয়রা
জানা গেছে, সম্প্রতি ভারতের রিভার রিসার্চ ইন্সটিটিউট নদীপথ নিয়ে সমীক্ষা করেছে। আপাতত সেই রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে সেচ দপ্তর। কোথায় নদী কতটা সরে গেছে, কতটা কোথায় চওড়া হয়েছে, কোথায় কতটা সরু হয়েছে, সেসব ওই রিপোর্টে থাকবে। আর সে অনুসারেই ব্যবস্থা নেবে সেচ দপ্তর। কারণ ওই অনুসারেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
প্রাথমিকভাবে ভারতের সেচ দপ্তর ২৮ কোটি টাকার কাজ শুরু করেছে। একাধিক জায়গায় বন্যা রোধে স্পার তৈরি করতে হবে। তিস্তার পুরনো গতিপথ বদলে যাওয়ার কারণে নতুন নতুন জায়গায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এর আগেও উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে তিস্তার পানি প্রবাহের পথ বদলে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছিল। উপগ্রহের মাধ্যমে সেই ছবি ধরা পড়েছে। ছবিতে দেখা গিয়েছিল একাধিক জায়গায় তিস্তার গতিপথ বদলে গেছে।
আকস্মিক নদীর গতিপথ বদলের এমন চিত্র হতবাক করেছে সিকিম সরকার ও সংশ্লিষ্ট অধিদফতরকে। ইতোমধ্যেই বিষয়টি রাজ্য ও কেন্দ্রের নদীর সংক্রান্ত যে সমস্ত দফতরগুলো রয়েছে তাদের কাছে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ অক্টোবর অতিবৃষ্টিতে তিস্তা নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে ভেঙে যায় বাঁধ। তারপরেই তিস্তার ভয়াবহ হড়পা বানে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ হন ৭৭ জন। এছাড়া প্রায় ৮৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন সেবারের বন্যায়। ভেঙে পড়ে সিকিমের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।