প্রতীকী ছবি
এক বছরে বিশ্বের ৩০ কোটির বেশি শিশু অনলাইনে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হয়। স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইল্ডলাইট গ্লোবাল চাইল্ড সেফটি ইনস্টিটিউটের করা এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার (২৭ মে) এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এটাই এত বড় পরিসরে অনলাইনে শিশু হয়রানি নিয়ে বৈশ্বিক প্রতিবেদন।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, বিশ্বে প্রতি আট শিশুর একটি গত এক বছরে অসম্মতিমূলক কথাবার্তা, যৌনতা–সম্পর্কিত ছবি ও ভিডিও অনুমতি ছাড়াই ছড়িয়ে দেয়ার শিকার হয়েছে। বিশ্বজুড়ে ভুক্তভোগী শিশুর এ সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটি ২০ লাখ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনাকাঙ্ক্ষিত অনলাইনে যৌনতাবিষয়ক কথাবার্তা (সেক্সটিং) ও প্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকে যৌন কার্যকলাপের জন্য অনুরোধের সংখ্যাও প্রায় ৩০ কোটি হতে পারে। এছাড়া শিশুদের নিপীড়ন–সংক্রান্ত অপরাধগুলোর মধ্যে ছবি গোপন রাখার জন্য ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করাসহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ডিপফেক ভিডিও এবং ছবি তৈরি করার মতো প্রযুক্তির অপব্যবহারের বিষয়গুলো যুক্ত রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্বজুড়ে শিশুদের নিপীড়নের এ সমস্যা থাকলেও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানকার প্রতি নয়জন পুরুষের মধ্যে একজন স্বীকার করেন কোনো এক পর্যায়ে তারা অনলাইনে শিশুকে নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
চাইল্ডলাইটের প্রধান নির্বাহী পল স্ট্যানফিল্ড বলেন, শিশু নির্যাতনের বিষয় এতটাই বেড়ে গেছে যে এ–সংক্রান্ত ফাইল গড়ে প্রতি সেকেন্ডে একবার নজরদারি সংস্থার কাছে জমা হয়।
স্ট্যানফিল্ড আরও বলেন, এটি বিশ্বব্যাপী একটি স্বাস্থ্য মহামারি যা অনেক দিন ধরে লুকিয়ে আছে। এটি প্রতিটি দেশেই ঘটে। ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে। এটি বন্ধে বৈশ্বিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন>> মোদির গদি নাড়িয়ে দিচ্ছেন ইউটিউবাররা?
যুক্তরাজ্যের পুলিশ গত মাসে দেশটির কিশোরীদের নিয়ে অনলাইনে যৌনতাসংক্রান্ত ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে দিতে পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অপরাধী দলগুলোর প্রচেষ্টা নিয়ে সতর্ক করার পর অনলাইনে শিশুদের যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির প্রতিবেদনটি সামনে এলো।
বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে কিশোরদের বিরুদ্ধে মামলা বাড়ছে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) জানিয়েছে, দেশটির শত শত শিক্ষক তাদের শিক্ষার্থীরা যে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সে সম্পর্কে তাদের জানিয়েছে। এ ধরনের ক্ষেত্রে অনলাইন প্রতারক বা স্ক্যামাররা অন্য তরুণ বা তরুণী সেজে সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করে।
এরপর তারা এনক্রিপ্ট করা বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপগুলোর মাধ্যমে কথাবার্তা চালায়। সেখানে তারা ভুক্তভোগীদের অন্তরঙ্গ ছবি পাঠানোর জন্য উৎসাহিত করে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার এক ঘণ্টার মধ্যেই তারা ব্ল্যাকমেইল শুরু করে এবং অর্থ দাবি করতে থাকে।
সূত্র: এএফপি
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।