ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি গাজা ও মিশর সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডোরের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েল। এরপর হামাসের একটি অস্ত্রভান্ডার দেখে ‘অবাক’ দখলদার দেশটির সেনাবাহিনী। ফলে গাজা থেকে হামাসকে নির্মূলের যে আশা তেল আবিব করছে, তা বাস্তবায়িত নাও হতে পারে। হলেও সময় লেগে যেতে পারে দীর্ঘ কয়েক মাস।
ফিলাডেলফি করিডোরের দখল নেয়ার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানান, সেখানে বিশটির মতো টানেল খুঁজে পাওয়া গেছে; যা হামাস অস্ত্রের চালান গ্রহণ করার গোপন আস্তানা হিসাবে ব্যবহার করতো। এসব টানেল ব্যবহার করে মিশর থেকে অস্ত্র চোরাচালান করে থাকতো স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা, যদিও এমন দাবি অস্বীকার করেছে মিশর।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা মনে করছেন, হামাসের হাতে যে অস্ত্রভান্ডার রয়েছে, তা দিয়ে আরও বহুদিন যুদ্ধ করতে পারবে সংগঠনটি। কয়েক দশক ধরে অস্ত্রের বিশাল মজুত গড়ে তুলেছে আল কাসসাম ব্রিগেড। ফলে ফিলাডেলফি করিডোর বন্ধ হলেও, অন্য স্থানে মজুত করা অস্ত্র ব্যবহার করবে হামাস।
মধ্যপ্রাচ্যের সামিরক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হামাস তার সামর্থ্যের পুরোটা কখনো প্রদর্শন করে না। শক্রকে ঘায়েল করতে উপযুক্ত সময়ের জন্য অনেক দিন ধরে অপেক্ষায় থাকে। সেই সঙ্গে বিশেষ বিশেষ অভিযানের সময় তারা তাদের সেরা অস্ত্রগুলো ব্যবহার করে। হামাসের কাছে অস্ত্রশস্ত্রের অভাব নেই। এখনো গাজার বহু এলাকা রয়েছে যা ইসরায়েলি সেনারা ঢুকতেও পারেনি। সেসব স্থানেও অস্ত্রের বড় ভান্ডার রয়েছে।
যদিও ইসরায়েল ২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করা হামাসকে উৎখাত করতে চেয়েছে, কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে ইসরায়েলি বাহিনী প্রতিদিনই হামাসের সক্ষমতা দেখে অবাক হয়েছে। তারা (হামাস) একটি সত্যিকারের সেনাবাহিনী; যা কয়েক বছর ধরে গড়ে উঠেছে তেল আবিব থেকে মাত্র ৫০ মিনিটের পথের দূরত্বে।
আরও পড়ুন>> বাইডেনের প্রস্তাবকে পাত্তাই দিলো না নেতানিয়াহু
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাসের টানেল এবং অস্ত্রের গুদাম এতো বিস্তৃত যে তা খুঁজে বের করা ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য প্রায় অসম্ভব। ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের সবগুলো ব্যাটিলিয়নকে ধ্বংস করার পরও সংগঠনটি আরও মারাত্মক হয়ে উঠার ক্ষমতা রাখে। গাজায় আল কাসসাম ব্রিগেডের প্রতিরোধ হামলাগুলো সেই বাস্তবতার প্রমাণ দেয়।
পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময়ে ধরে অস্ত্র তৈরিতেও প্রশিক্ষণ নিয়েছে হামাস। বেশ কিছু রকম অস্ত্র এখন হামাস নিজেরাই বানাতে পারে। ফলে সংগঠনটির অস্ত্রের অভাব হবে না। সেই সঙ্গে হামাসের কাছে কী পরিমাণ রকেট ও মর্টার রয়েছে, সেটির চিত্রও স্পষ্ট নয়। শুধু ধারণা দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে ইসরায়েল, কিন্তু দীর্ঘ সময় যুদ্ধ হলে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবে হামাসই।
উল্লেখ্য, হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি সীমান্ত ভেঙে ভেতরে ঢুকে হামলা চালায়। সেই হামলায় ইসরায়েলি সেনাসহ প্রায় ১২ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়। প্রতিক্রিয়ায় সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সেই হামলায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার ৪০০ জনে। যার অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।