ফাইল ছবি
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে বৈঠক চলছে। রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন তারা। প্রায় দুই যুগ পর উত্তর কোরিয়ার মাটিতে বৈঠকে অংশ নিয়েছেন পুতিন। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ দুটি নিজেদের প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী। সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
বুধবার (১৯ জুন) দিনের প্রথম প্রহরে পুতিন উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অবতরণ করেন। এসময় পুতিনকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখার পর পুতিনকে উষ্ণ আলিঙ্গন করেন কিম। এসময় কোরিয়ার ঐতিহ্য অনুযায়ী একটি লাল গোলাপের তোড়া দিয়ে পুতিনকে স্বাগত জানানো হয়। পরে দুই নেতা কুমসুসান স্টেট গেস্ট হাউসের উদ্দেশে একই লিমোজিন গাড়িতে করে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এর পর এ দুই নেতাকে কিম ইল সুং স্কোয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়। সেখানে উত্তর কোরিয়ার সামররিক বাহিনীর সৈন্যরা তাদের স্বাগত জানান।
কোরিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্ব এবং ঐক্য বজায় রাখতে পুতিন এবং কিমের এবারের বৈঠক ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ।
আন্তর্জাতিকভাবে ন্যায়বিচার এবং বিশ্বে নিজেদের কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করতে এই বৈঠক দুই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থাটি। গত ২৪ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম উত্তর কোরিয়া সফরে এসেছেন পুতিন। রাশিয়ার প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিনিময়ে পিয়ংইয়ং মস্কোকে অস্ত্র সরবরাহ করছে এমন অভিযোগের মধ্যে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন বাহিনী ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় হামলা শুরু করে।
ইউক্রেনে চলমান হামলার মধ্যে পুতিনের এবারের সফর দুদেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ। এ ছাড়া পুতিনের এ সফর পশ্চিমাদের উদ্বেগের কারণও হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্র মস্কো এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে অস্ত্র বিনিময়ের অভিযোগ করলেও বারবার ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুতিন এবং কিম প্রশাসন।
পুতিন এবং কিমের এর আগে সর্বশেষ সক্ষাৎ হয়েছিল ২০২৩ সালে। সেসময় রাশিয়ার মাটিতে সফরে গিয়েছিলেন কিম। অন্যদিকে এর আগে ২০০০ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন পুতিন। মঙ্গলবার পূর্ব সাইবেরিয়ার শহর ইয়কুতস্ক থেকে উত্তহর কোরিয়া উদ্দেশে যাত্রা করেন পুতিন। একটি যুদ্ধবিমান পুতিনকে বহনকারী উড়োজাহাজকে পাহারা দিয়ে উত্তর কোরিয়ায় নিয়ে যায়।
পুতিনের সঙ্গে এবারের সফরে রাশিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একটি প্রতিনিধিদল রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুরোভসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। সফরে রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বেশ কয়েকটি নথি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ। এছাড়া ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের চুক্তি সহ আরও বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। উশাকভ জানিয়েছেন, এসব চুক্তির মাধ্যমে দুদেশের সহযোগিতা আরও বাড়বে। গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনীতি, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যে যা কিছু হয়েছে, সেগুলো বিবেচনায়া রেখেই এ চুক্তি হবে। তবে এ চুক্তি সরাসরি কোনো দেশকে লক্ষ্য করে করা হচ্ছে না।
আপন দেশ/ইডি/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।