ছবি: সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক হয়। এতে ১০ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। পাশাপাশি ফারাক্কা চুক্তির নবায়ন করা হয়েছে। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে এ চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, এ চুক্তি নবায়ন মানে বাংলাকে ‘বিক্রি করার পরিকল্পনা’। একই সঙ্গে তিস্তা চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তৃণমূল বলছে, রাজ্যের বুকে রাজ্যকে এড়িয়ে রাজ্যের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কোনও কাজ করা সহজ হবে না।
তৃণমূল জানায়, ফারাক্কা-গঙ্গা চুক্তিতে রাজ্য সরকারও পক্ষ। কিন্তু চুক্তি নবায়নের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি। এ চুক্তি বাবদ রাজ্য সরকারের যে পাওনা টাকা, তা-ও বকেয়া রয়েছে। গঙ্গার ড্রেজ়িংয়ের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। যা বাংলায় বন্যা ও ভাঙনের প্রাথমিক কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি হয়েছিল। তাতে একাধিক রাজ্য সরকারও শরিক ছিল। এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে।
সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তৃণমূল বলছে, ২০১৭ সালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও ফরাক্কার বাঁধের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বেড়িবাঁধ দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন>> ‘ছাগলকাণ্ডে’র মতিউরের বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা
মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ার একাংশে গঙ্গাভাঙন নিয়ে ২০২২ সালে মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই চিঠির প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল বলেছে, দু’বছর আগে মমতাও বলেছিলেন, ফরাক্কা ব্যারেজের জন্যই বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকাকে ভাঙনের মুখে পড়তে হচ্ছে। যার ফলে মানুষের ভিটেমাটি যেমন যাচ্ছে, তেমনই ক্ষতি হচ্ছে চাষেরও।
বাংলার শাসকদলের পক্ষ থেকে কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই তিস্তা জলবণ্টন চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী অন্য দেশের সঙ্গে কোনো বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত করার অধিকার কেন্দ্রের রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রকে এটাও বুঝতে হবে, রাজ্য সরকার সহযোগিতা না-করলে তিস্তা পানি বণ্টনের মতো চুক্তি থমকে থাকে।
তিস্তা পানিবণ্টন নিয়ে রাজ্য সরকারের এ অনড় অবস্থানের পর কেন্দ্রও সম্মত হয়েছে, বাংলাকে এড়িয়ে গিয়ে তারা কিছু করবে না। অনেকের মতে, রাজ্যকে এড়িয়ে ফরাক্কা চুক্তি নবায়ন হওয়ায় তিস্তা চুক্তি আরও অতলে হারিয়ে গেল।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।