ছবি: সংগৃহীত
বিক্ষোভে উত্তাল কেনিয়ার রাজধানী শহর নাইরোবি। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের একটি অংশে আগুন দিয়েছে। জননিরাপত্তায় বিক্ষোভ দমনে পুলিশের পাশাপাশি রাস্তায় সেনাবাহিনীও নামানো হয়েছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, যারা এ কাজ করেছে, তারা দেশবিরোধী। সকলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
বিক্ষোভের সূত্রপাত
সম্প্রতি কেনিয়ার পার্লামেন্টে একটি আর্থিক বিলের প্রস্তাব আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, জাতীয় বাজেটের ঘাটতি কমাতে কর ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হবে। বেশ কিছু নতুন কর বসানো হবে। এতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েছে কেনিয়ার যুব সমাজ।
নাইরোবির যুব সমাজের বক্তব্য
যুব সমাজ বলছেন, নতুন করের চাপ সরাসরি তাদের উপর এসে পড়বে। আর সে কারণেই তারা প্রতিবাদ শুরু করেছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) সে আন্দোলনই সহিংস হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে আক্রমণ চালায়। আগুন লাগানোর চেষ্টা হয় পার্লামেন্টের একাংশে। পুলিশ পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। তাতে বেশ কিছু মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন।
সাংবাদিকের বক্তব্য
ডয়চে ভেলে’র সাংবাদিক এডিথ কিমানি জানিয়েছেন, বিক্ষোভ নিয়ে সরকারের দাবি পুরোপুরি মেনে নেয়া যায় না। যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তারা কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অংশ নন। এরা মূলত যুব সমাজ। করের প্রস্তাব পার্লামেন্টে তোলার পর যুব সমাজ রাস্তায় নেমেছে। এবং শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শুরু করেছে। তারা ভেবেছিল, পার্লামেন্টের রাজনীতিবিদেরা তাদের কথা শুনবেন। কিন্তু তাদের কথায় কর্ণপাত না করায় মঙ্গলবার বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন>> ইসরায়েলে নারীদের মাঝে বন্দুক কেনার হিড়িক
এডিথ আরও বলেন, কেনিয়ায় এখন যুব সমাজের সংখ্যা বেশি। গোটা দেশের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশই যুবক। নতুন কর ব্যবস্থা সরাসরি তাদের রোজগার কমাবে। এমনিতেই কেনিয়ায় যুব সমাজের একটি অংশ হতাশ। চাকরি নেই, কাজ নেই। তার মধ্যে আয়ের উপর নতুন কর কেউ ভালো চোখে দেখছেন না। সেখান থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল।
অ্যামনেস্টির বক্তব্য
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, পুলিশ আসল গুলি চালিয়েছে। বেশ কিছু বিক্ষোভকারীর গায়ে বুলেট লেগেছে। এতে আহত অন্তত পাঁচজন। একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। গুরুতর আহত অন্তত ৩১ জন। ৫২ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আরও গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা আছে। শুধু নাইরোবি নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সর্বত্র সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার নিন্দা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। যেভাবে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়েছে, তার সমালোচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
সূত্র: রয়টার্স, এপি, এএফপি
আপন দেশ/এইউ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।