ছবি: সংগৃহীত
নুসেইরাত আশ্রয় শিবিরে ইসরায়েলি হামলার পর ফিলিস্তিনি কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষে পরিষ্কারভাবে একটি লেবেল লেখা ছিল, ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’। অর্থাৎ ভারতে নির্মিত।
প্রায় আট মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় চলছে ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যা। ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসকে নির্মূলের এ অভিযানের নামে ভারতের কাছ থেকে রকেট ও বিস্ফোরক সহায়তা পেয়েছে ইসরায়েল।
বুধবার (২৬ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।
মে মাসে অস্ত্র বহনকারী একটি ইসরায়েলগামী জাহাজকে নিজেদের বন্দরে নোঙর ফেলতে দেয়নি স্পেন। মারিয়ান ড্যানিকা নামের একটি জাহাজ ২১ মে দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব কার্টেজেনা বন্দরে নোঙর ফেলার অনুমতি চেয়েছিল।
স্পেনের সংবাদমাধ্যম এল পাইস তখন জানিয়েছিল, অস্ত্রের চালান বহন করা জাহাজটি ডেনমার্কের পতাকাবাহী। এতে ২৭ টন বিস্ফোরক উপাদান ছিল। ভারতের চেন্নাই বন্দর থেকে জাহাজটি ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে যাচ্ছিল।
আরও পড়ুন>> ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে কিউবা
এ ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে ১৫ মে স্পেনের কার্তাজেনা বন্দরে বোরকুম নামের আরেকটি জাহাজ ভিড়েছিল। ওই জাহাজেও ভারতীয় অস্ত্র ছিল।
আল-জাজিরার নথি অনুসারে, বোরকুম জাহাজটিতে ভারতের বিস্ফোরক বোঝাই ছিল। এটি গাজা উপত্যকা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরের দিকে যাচ্ছিল।
সাগরের ট্র্যাকিং সাইটগুলো পর্যালোচনা করে আল-জাজিরা জানায়, জাহাজটি ২ এপ্রিল ভারতের চেন্নাই থেকে যাত্রা শুরু করে। হুতির হামলা ঠেকাতে লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে যাত্রাপথ এড়িয়ে আফ্রিকা ঘুরে যায়।
ফিলিস্তিনি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কাজ করা সংস্থা সলিডারিটি নেটওয়ার্ক থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে জানা যায়, বোরকুম জাহাজে ২০ টন রকেট ইঞ্জিন, বিস্ফোরক, ১২.৫ টন বারুদসহ রকেট, ১৫০০ কেজি বিস্ফোরক ও কামানের জন্য ৭৪০ কেজি বারুদ, প্রোপেল্যান্ট ছিল।
আরও পড়ুন>> ইসরায়েলে গণবিক্ষোভ, সরকারের পদত্যাগ দাবি
গোপন সূত্রে জানা গেছে, জাহাজটির সমস্ত কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বাধ্য করা হয়েছে যেকোন অবস্থাতেই আইএমআই সিস্টেম বা ইসরায়েলের নাম নেয়া যাবে না। আইএমআই সিস্টেমস একটি প্রতিরক্ষা সংস্থা; যেটি ২০১৮ সালে ইসরায়েলের বৃহত্তম অস্ত্র প্রস্তুতকারক এলবিট সিস্টেমস কিনে নিয়েছে।
তবে আল-জাজিরার এসব তথ্য অস্বীকার করছে জাহাজটির সংশ্লিষ্টরা। জাহাজের জার্মান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক এমএলবি ম্যানফ্রেড লাউটারজং বেফ্রাচতুং আল-জাজিরাকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘জাহাজটি ইসরায়েলে যাওয়ার সময় কোনও অস্ত্র বা অন্য কোনও পণ্য লোড করেনি’।
অন্যদিকে গত ২১ মে স্পেনে নোঙ্গর করতে না দেয়া ডেনমার্কের পতাকাবাহী আরেক জাহাজ মারিয়ান ড্যানিকাতেও ২৭ টন বিস্ফোরক উপাদান ছিল। যেটি ভারতের চেন্নাই বন্দর থেকে জাহাজটি ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে যাচ্ছিল।
আল-জাজিরা জানায়, বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে দেখা গেছে, গাজায় চলমান মাসব্যাপী যুদ্ধের সময় নীরবে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ করছে ভারত।
আপন দেশ/এইউ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।