ছবি: সংগৃহীত
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সংস্কারপন্থি মাসুদ পেজেশকিয়ান। গতকাল শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রানঅফে কট্টরপন্থি সাঈদ জালিলিকে হারান তিনি।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাসুদ পাজেশকিয়ান এমন একজন ব্যক্তি যাকে বিশ্বশক্তি স্বাগত জানাবে। তাদের আশা থাকবে, পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের যে উত্তেজনা চলছে সেটি সমাধানে তিনি শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বন করবেন।
৬৯ বছর বয়সী হার্ট বিশেষজ্ঞ মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, তিনি বাস্তবধর্মী একটি পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করবেন। এছাড়া পশ্চিমাদের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পারমাণবিক চুক্তিটিও পুনর্জীবিত করার অঙ্গিকারও করেছেন তিনি। ‘অখ্যাত’ এ প্রবীণ রাজনীতিবিদ আরও বলেছেন, তিনি সামাজিক স্বাধীনতার পক্ষে এবং রাজনৈতিক একত্ববাদের বিরুদ্ধে কাজ করবেন।
ইরানে রয়েছে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা। ক্ষমতার মূল কেন্দ্রে রয়েছেন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা। পারমাণবিক কার্যক্রম ও মধ্যপ্রাচ্যে সশস্ত্র যোদ্ধাদের সহায়তা নিয়ে ইরানের যে নীতি রয়েছে সেটি বদলে ফেলার খুব বেশি ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই। কারণ প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রাষ্ট্রের সব বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
তবে প্রেসিডেন্ট চাইলে নীতি পরিবর্তনে প্রভাব রাখতে পারবেন। এছাড়া আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উত্তরাধিকারী নির্বাচনের বিষয়টিও খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করবেন তিনি।
আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির প্রতি অনুগত থাকবেন মাসুদ?
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান একাধিকবার বলেছেন, তিনি খামেনির নীতিগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। এছাড়া ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার কোনো ইচ্ছাও তার নেই।
মাসুদ ভোটারদের এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, নির্বাচনের আগে তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; যদি সেগুলো পূরণ না করতে পারেন তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। শুধু শুধু সময় নষ্ট করবেন না।
হিজাব নিয়ে অবস্থান
মাসুদ পেজেশকিয়ান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট দিয়ে বলেছিলেন, “আমরা হিজাব আইনকে শ্রদ্ধা জানাব। কিন্তু নারীদের প্রতি কখনো বাড়াবাড়ি এবং অমানবিক আচরণ করা হবে না।”
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৮০ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে চিকিৎসক ও যোদ্ধা হিসেবে সম্মুখভাগে কাজ করেছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।
১৯৯৪ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিজের স্ত্রী এবং এক সন্তানকে হারান তিনি। ওই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া দুই ছেলে ও মেয়েকে তিনি একাই বড় করেছেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আর বিয়ে করেননি।
সূত্র: রয়টার্স
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।