ছবি: সংগৃহীত
শ্রীলঙ্কায় গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম নির্বাচনে একজন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দফা ভোট গণনার চূড়ান্ত ফলাফলে অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল দ্বিতীয় দফা ভোট গণনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হল। ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বামপন্থীদের প্রথম নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শপথ নেবেন তিনি।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দ্বীপরাষ্ট্রটিতে গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম অনুষ্ঠিত হয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেসহ ৩৯ জন প্রার্থী অংশ নেন। তবে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
রোববারের প্রাথমিক ফলাফল অনুসারে, নেতা হওয়া সত্ত্বেও দিশানায়েকের ভোটের ভাগ কমেছে ৪২.৩১ শতাংশে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, এসজেবির নেতা সজিথ প্রেমাদাসা ৩২.৭৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য একজন প্রার্থীকে মোট ভোটের কমপক্ষে ৫০ শতাংশের বেশি পেতে হইয়। ফলে ভোট গণনা গড়ায় দ্বিতীয় দফায়।
শ্রীলঙ্কার নির্বাচনী ব্যবস্থা ভোটারদের ব্যালট পেপারে তালিকাভুক্ত পছন্দের ক্রম অনুসারে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়। এ আইন অনুসারে, যারা দ্বিতীয় পছন্দ হিসাবে দুটি নেতৃস্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন তাদের পুনরায় গণনা করা হয়। এতেও বাজিমাত দিশানায়েকের।
২০২২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। এরপর সংসদের সিদ্ধান্তে রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ ওঠে রনিলের বিরুদ্ধে। বিপরীতে, ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে দুর্নীতিবিরোধী এবং দরিদ্র-সমর্থক নীতির পক্ষে কথা বলে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট অনুড়া কি চীনপন্থি নাকি ভারতপন্থি?
তবে কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, দিশানায়েকে চীনপন্থী বেশি। এর অন্যতম কারণ তার রাজনৈতিক মতাদর্শ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বলছে, মার্ক্সিস্ট পার্টি জানাথা ভিমুক্তি পেরামুনার (জেভিপি) নেতা এ দিশানায়েকে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির পতনের পর থেকে নিত্যপণ্যের ব্যাপক ঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। এ সময়ে, দিশানায়েকের জোট এনপিপির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হয়ে ওঠে। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে পূর্ণ উপস্থিতি নিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।
আপন দেশ/অর্পিতা
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।