Apan Desh | আপন দেশ

পাকিস্তান অবজারভারের নিবন্ধ

শেখ হাসিনার পতন স্বৈরাচারী শাসকদের জন্য শিক্ষা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৭:৫০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনার পতন স্বৈরাচারী শাসকদের জন্য শিক্ষা

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে ছিলেন শেখ হাসিনা। গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কঠোর দমনপীড়নের পাশাপাশি স্বৈরাচারের মতো দেশ শাসন করেছেন তিনি।

হাসিনার শাসনামল ছিল অসহিষ্ণুতা-অভদ্রতা ও স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতিতে পূর্ণ। শেখ হাসিনা চরম অহংকারের সঙ্গে দেশ শাসন করেছেন। তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল তিনি অপরাজেয় এবং তিনি কেবল অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে শাসন করার জন্যই জন্মগ্রহণ করেছেন।

তবে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ব্যাপক দমনপীড়ন করে তিনি। ফলে গণ-রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপান্তরিত হলে হাসিনার ক্ষমতার কাঠামো তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভ ও দাবির সামনে হাসিনাকে আত্মসমর্পণ করতে হয়। হাসিনার সমস্ত সমর্থক ও রাজনৈতিক অনুরাগীদের নিরাসক্ত রেখে খুব তাড়াহুড়ো করে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যেতে হয়েছে। ঢাকায় শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনে অন্যান্য দেশের শাসকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা রয়েছে।

শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশের অর্থনীতি অত্যন্ত ভালোভাবে কাজ করছে। দিনে দিনে এটি কেবল মিথ বা অতিকথন হিসাবেই প্রমাণিত হয়েছে। কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের অথিকথনের পরও দেশটির ওপরে ঋণের বিশাল বোঝা। প্রবল বেকারত্ব এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও রয়েছে আকাশ ছোঁয়া।

হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ সবসময়ই ভারতের মোদি সরকারের সার্বিক সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছিল। একপর্যায়ে বাংলাদেশ কার্যকরভাবে তার শক্তিশালী প্রতিবেশীর (ভারতের) একটি স্যাটেলাইট দেশে পরিণত হয়ে যায়। আর এটিই বাংলাদেশি জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। পাকিস্তানের সঙ্গে ভয়াবহ যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে আবির্ভূত হয়।

বাংলাদেশের সংবিধান দেশের জনগণকে বাক স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংগঠনের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে জনগণের সকল মৌলিক ও অপরিহার্য সকল অধিকারই পদদলিত হয়েছে। এর পরিবর্তে সন্ত্রাসের রাজত্ব, কঠোর কারফিউ, রাজনৈতিক বিরোধীদের গ্রেফতার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধসহ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ আন্দোলনকে দমন করার জন্য অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রয়োগের জন্যও হাসিনা দায়ী ছিলেন। তিনি পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাও উপভোগ করছিলেন। আর তাই তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনা সম্ভব ছিল না। আর এ কারণে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। 

কেবল শিক্ষার্থীদের দৃঢ় শক্তি এবং বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার ফলে বাংলাদেশে সরকারের পতন হয়। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতে আশ্রয় নেন। বিশ্বের স্বৈরাচারী শাসকদের বাংলাদেশের ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়