ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৩৩০ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৯৩৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার বাহিনীর হামলায় আরও অন্তত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
স্থানীয় সময় (২৮ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বোমাবর্ষণ বাড়িয়েছে ইসরায়েল। ট্যাঙ্কগুলো শহরের উত্তর ও দক্ষিণে আরও গভীরে ঢুকে পড়েছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু করার একদিন পর যখন গাজায়ও একই ধরনের চুক্তির আশা করা হচ্ছে, ঠিক এ সময়েই ঘটল এমন ঘটনা।
প্রায় ১৪ মাসের সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে লেবাননে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয় বুধবার। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় গাজার শাসক দল হামাসও যুদ্ধবিরতি চুক্তি চায় বলে ইঙ্গিত দেয়। তবে ইসরায়েল কিছু জানায়নি।
গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত আমাল আবু হামিদ বলেন, আমি আশা করি লেবাননের মতো একটি যুদ্ধবিরতি ঘটবে। আমি শুধু আমার সন্তানদের নিয়ে যেতে চাই আমার জমি, আমার বাড়ি দেখতে, তারা আমাদের সাথে কী করেছে তা দেখতে, আমি নিরাপদে থাকতে চাই।
দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুত পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া একটি স্কুলের আঙিনায় বসে তিনি বলেন, সৃষ্টিকর্তা ইচ্ছুক, আমাদের একটি যুদ্ধবিরতি হবে। তিনি বলেন, জীবন সুন্দর ছিল যুদ্ধের আগে। এখন সুন্দর কিছুই নেই, সব শেষ হয়ে গেছে। আমাদের ঘরবাড়ি চলে গেছে, আমাদের ভাইয়েরা চলে গেছে, আর কেউ অবশিষ্ট নেই। এখন আমরা খুব কমই পাই। এক বেলা খাবারের জন্য আমরা রুটিও পাই না।
মঙ্গলবার লেবানন চুক্তি ঘোষণা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি এখন গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করবেন। তিনি বলেন, জিম্মিদের মুক্তি এবং ক্ষমতা থেকে হামাসকে অপসারণসহ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে আরেকটি চাপ সৃষ্টি করবে।
তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে দেখা যায়, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার প্রচেষ্টার সামান্য অগ্রগতি হয়েছে। আলোচনা এখন আটকে আছে। মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোও আগ্রহ হারিয়েছে কিছুটা।
যুক্তরাষ্ট্র এবং এর আরব মিত্ররা বলতো, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষের অবসান ঘটবে। এখন তারা উল্টো আশা করছে। এর পেছনে যুক্তি হলো, লেবাননে যুদ্ধবিরতি দেখায় যে, সমঝোতা সম্ভব এবং হামাস এখন আরও বিচ্ছিন্ন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা করে হামাস। এতে প্রায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পর ওইদিন থেকই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, তখন থেকে গাজায় ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।