সংগৃহীত ছবি
ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় মোরাদাবাদের একটি আবাসিক এলাকায় ধর্মীয় কারণে এক মুসলিম দম্পতিকে বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হিন্দু প্রতিবেশীরা ওই মুসলিম দম্পতিকে তাদের বাড়িতে বসবাস করতে দিচ্ছে না। ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এ ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনাটি মোরাদাবাদের টিডিআই আবাসিক এলাকায় ঘটেছে।
গত মঙ্গলবার রাতে মোরাদাবাদের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় এক মুসলিম দম্পতি বাড়িটি কেনার পর প্রতিবেশীরা তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন। প্রতিবাদে এক ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এটি নিয়ে দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
মেঘা অরোরা নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, অশোক বাজাজ নামের এক চিকিৎসক কোনো ধরনের পরামর্শ ছাড়াই ওই মুসলিম দম্পতিকে বাড়িটি বিক্রি করেন। আমরা আমাদের মন্দিরের সামনে মুসলিম পরিবারকে সহ্য করতে পারি না। এটা হিন্দু নারীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি, তারা যেন নতুন মালিকদের নিবন্ধন বাতিল করে। আমরা এখানে ভিন্ন ধর্মের কাউকে আসতে দেব না। যদি মুসলিম দম্পতি তাদের বাড়ি অধিকার করা বিষয়টি প্রত্যাহার না করেন। তবে তারা প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন।
এ ঘটনায় অভিযোগ জানাতে হিন্দু বাসিন্দারা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় ঘেরাও করে। ডা. বাজাজ ও ওই দম্পতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। স্থানীয় প্রতিবাদের ফলে বাড়িটি পুনরায় হিন্দুদের কাছে বিক্রি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ডা. বাজাজ বলেন, এ হাউজিংয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা রাজি হয়েছেন মুসলিম দম্পতি বাড়িটি হিন্দু পরিবারদের কাছে বিক্রি করবেন।
ডা. বাজাজ বলেন, মোরাদাবাদের একটি চক্ষু হাসপাতালে কাজ করি। প্রায় ছয় বছর ধরে ওই আবাসিক এলাকায় বসবাস করছি। মুসলিম দম্পতিকে প্রায় ৪০ বছর ধরে চিনি। তারা দুজনেই চিকিৎসক। এখন এ ঘটনার কারণে মুসলিম দম্পতি নতুন বাড়িতে উঠতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না।
তিনি ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেন বলেন, আমি বুঝতে পারিনি যে এটি জাতীয় খবর হয়ে উঠবে।
এ ধরনের ঘটনাটি ভারতে একমাত্র মোরাদাবাদেই ঘটেনি। ২০২১ সালে একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল দুটি মুসলিম পরিবার। বাড়ি কেনার পর কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনের চাপের মুখে পড়েছিলেন তারা। গ্রামীণ ভারতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ দীর্ঘকাল ধরে একসাথে বসবাস করলেও শহরাঞ্চলে সম্প্রতি এমন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।