মায়ানমারে তৎপরতা বিদ্রোহী বাহিনী।
মায়ানমারের বিদ্রোহীরা মণিপুর সীমান্তঘেঁষা চিন প্রদেশের বড় অংশ দখল করেছে। এ এলাকাতেই বসবাস করছে কুকি-চিন নামে পরিচিত মায়ানমারের কুকি জনগোষ্ঠী। ফলে সীমান্ত পেরিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশের শঙ্কা আরও বেড়েছে।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাবতী’ জানিয়েছে, চিন প্রদেশের ৮৫ শতাংশ ইতিমধ্যেই বিদ্রোহীদের দখলে। এর আগে বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা রাখাইন প্রদেশও বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণে নেয়।
চিন প্রদেশ দখলে ‘চিন ব্রাদারহুড’ জোটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এ জোটের অন্যতম সদস্য ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স, ইয়াও আর্মি ও মনিওয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি এ অভিযানে সক্রিয় অংশ নেয়।
২০২১ সালে মায়ানমার সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাত করে সামরিক শাসন শুরু করে। এর প্রতিবাদে একাধিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী সামরিক জুন্টার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হয়। নভেম্বর ২০২৩ থেকে এ বিদ্রোহে নতুন গতি আনে আরাকান আর্মি (এএ), তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ও মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ)।
এ তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী গঠন করে ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ ও ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে অভিযান শুরু করে। পরবর্তীতে এ যুদ্ধে যুক্ত হয় চিন ন্যাশনাল আর্মি (সিএনএ), চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ) ও কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স (কেএলডিএফ)। এছাড়া গণতন্ত্রপন্থী সরকারের সশস্ত্র বাহিনী পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) বিদ্রোহে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
চিন প্রদেশ দখলের ফলে সীমান্তবর্তী মণিপুরে নতুন করে কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেড়েছে। ইতিমধ্যেই বিদ্রোহীরা থাইল্যান্ড ও চিন সীমান্তের বড় অংশ দখল করেছে। সামরিক জুন্টা সরকার কার্যত বিদ্রোহীদের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।
বিদ্রোহীদের সমর্থনে শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি ও ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি (ইউডব্লিউএসপি) বেশ কিছু ‘মুক্ত’ এলাকায় সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করছে। গণতন্ত্রপন্থী শক্তি ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে মায়ানমারে সংঘাতের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।