সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত এখনও অনিশ্চিত। যদিও ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়। তবুও নয়াদিল্লি চাইলে এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। এ চুক্তিতে প্রত্যর্পণ নাকচ করার সুযোগ রাখা আছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার বিশ্লেষণধর্মী অনুষ্ঠান ইনসাইড স্টোরি–তে এ বিষয়টি গভীরভাবে আলোচিত হয়। “বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে কি ভারত ফেরত পাঠাবে?” শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ জটিল পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ২২ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়ে কূটনৈতিক পত্র পাঠিয়েছে। গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অভিযোগে তাকে দেশে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করতে চায় বাংলাদেশের অন্তরবর্তী সরকার।
ভারতের ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোও ভারতের বিবেচনায় আসবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা নয়, শুধু কূটনৈতিক অনুরোধ দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো সোহেলা নাজনীন বলেন, ২০১৩ সালের প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, ভারত অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। বাংলাদেশের আদালতের প্রক্রিয়াগুলো যথাযথ না হলে ভারত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। শেখ হাসিনার ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার মানের ওপর নির্ভরশীল।
নারী অধিকারকর্মী শিরীন হক জানান, এ ট্রাইব্যুনাল অতীতে বিতর্কিত ছিল। তবে এ মুহূর্তে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছেন, তার মা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। যদিও আমি এ মতের সঙ্গে একমত নয়।
শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আবদুল মাজেদকে ভারত অতীতে প্রত্যর্পণ করেছিল উল্লেখ করে শিরীন হক আশা করেন, ভারত এবারও বাংলাদেশের অনুরোধে সাড়া দেবে।
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সম্প্রতি বলেছে, বাংলাদেশ যত দিন মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত করবে না, তত দিন দিল্লিকে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের আশ্রয় দিতে হবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে শিরীন হক বলেন, তারা বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডের বাতিল চেয়েছে। মামলা যেমনই হোক তিনি নিজেও সব ধরনের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। তবে তাকে (শেখ হাসিনা) বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।