কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো
কানাডার প্রধান তিনটি বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি, এনডিপি এবং ব্লক ক্যুইবেক জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর জাস্টিন ট্রুডোকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন করে না। ২০২১ সালের সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।
নির্বাচনের পর থেকে ট্রুডোকে এনডিপির সমর্থন নিয়ে সরকার চালাতে হচ্ছে। অন্যদিকে জাস্টিন ট্রুডোর দলের প্রায় ৫০ জন পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) জানিয়ে দিয়েছেন, তারা তাকে আর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না। ২৭ জানুয়ারি কানাডায় পরবর্তী সংসদ অধিবেশন বসবে। অধিবেশনের দুই বা তিন কর্মদিবসের মধ্যে তার ওপর অনাস্থা প্রস্তাব আনবে কনজারভেটিভ পার্টি।
একেবারে অতি আশ্চর্যজনক কিছু না ঘটলে সে দিনই তার ও লিবারেল সরকারের পতন হবে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সে দিন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগেই পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) নিজ দল লিবারেল পার্টির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন জাস্টিন ট্রুডো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন সূত্রের বরাতে রোববার (০৫ জানুয়ারি) এ দাবি করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গ্লোব অ্যান্ড মেইলকে ওই তিন ব্যক্তি বলেছেন, ট্রুডো কবে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নন। তবে বুধবার একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ককাস বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার আগেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক কোনও মন্তব্য পাওয়া যায় নি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদত্যাগের ঘোষণার পর ট্রুডো তৎক্ষণাৎ গদি ছেড়ে দেবেন নাকি নতুন নেতা মনোনীত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
২০১৩ সালে গভীর সংকটে থাকা লিবারেল পার্টির ত্রাণকর্তা হিসেবে হাল ধরেছিলেন ট্রুডো। সেবার দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টের হাউজ অব কমন্সে তারা তৃতীয় অবস্থানে নেমে আসে।
ট্রুডোর পদত্যাগে লিবারেল পার্টি একটি স্থায়ী নেতৃত্বহীনতার মধ্যে পড়তে পারে। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হতে পারে লিবারেলরা।
ওদিকে, ২০ জানুয়ারি ওভাল অফিসের চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রশাসনের সঙ্গে তার সামলে চলার জন্য সব দেশ কমবেশি আটঘাট বেঁধে মাঠে নামছে। এমন সময় ট্রুডোর পদত্যাগে কানাডায় নতুন সরকার নির্বাচনের জন্য দ্রুত ভোটের আয়োজনের দাবি জোরালো হয়ে উঠতে পারে।
এক ব্যক্তির বরাতে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, লিবারেল পার্টির অন্তর্বর্তীকালীন নেতা ও কানাডার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে অর্থমন্ত্রী ডোমিনিক লেব্লাংক আগ্রহী কিনা সে বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন ট্রুডো। তবে লেব্লাংক নিজেই নির্বাচনী দৌড়ে নামার পরিকল্পনা করলে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে না।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।