Apan Desh | আপন দেশ

টিউলিপের ফ্ল্যাটের বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত: ড. ইউনূস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১২:৪৫, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

টিউলিপের ফ্ল্যাটের বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত: ড. ইউনূস

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও টিউলিপ সিদ্দিক।

ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার সদস্য ও ইকোনোমিক সেক্রেটারি টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগের মুখে রয়েছেন।  ব্রিটিশ এ মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে দেশটির বিরোধী দল। এরইমধ্যে দুর্নীতির অভিযোগ অভিযুক্ত টিউলিপকে নিয়ে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১২ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ ইস্যুতে টিউলিপকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, লন্ডনের সে ফ্ল্যাটের বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। যদি প্রমাণিত হয় এটি ‘ডাকাতির’ মাধ্যমে পেয়েছেন। তবে ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফেরত দেয়া উচিত।

ড. ইউনূস বলেছেন, টিউলিপ দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী। কিন্তু নিজের সম্পদ গোপন করেছেন। এটা একপ্রকার ‘নির্মম রসিকতা।’ উচিৎ ছিল ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করা। কিন্তু তিনি তা না করে নিজের পক্ষে সাফাই গাইছেন। 

টিউলিপের ফ্ল্যাট ও অন্যান্য সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যদি প্রমাণিত হয়, এসব সম্পদ ‘ডাকাতি’ বা অবৈধ পথে পাওয়া। তবে তা বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফেরত দেয়া উচিত। এটি শুধু চুরি নয়; কেউ চুরি করলে গোপন রাখে। এটি প্রকাশ্য ডাকাতি।

টিউলিপের সঙ্গে শেখ হাসিনার পরিবারের যোগসূত্র উল্লেখ করে ড. ইউনূস আরও বলেছেন, হাসিনার সরকারে কোনো সততা নেই। তারা পুরোপুরি রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের এলিট শ্রেণি প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলারের মতো অর্থ পাচার করছে। এ অর্থ বিদেশে বাড়ি, সম্পদ কেনায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন, টাকা পাচারের জন্য ক্যারিবীয় অঞ্চলের ব্যাংকসহ লন্ডনে বাড়ি কেনা হয়েছে। টিউলিপ ও হাসিনার পরিবারের এ সম্পদ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের করের টাকা। এ টাকার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তদন্ত করছে।

ড. ইউনূস বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবার লন্ডনে অনেক সম্পদ ব্যবহার করেছে। যার সঙ্গে শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান রহমান জড়িত। সায়ান একটি অফশোর ট্রাস্টের মাধ্যমে গোল্ডার্স গ্রিনে ১.২ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বাড়ি কিনেছিলেন।

সালমান এফ রহমানের পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। সায়ানের বিরুদ্ধে দুবাই ও সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচার ও প্রাসাদোপম সম্পত্তির মালিকানা থাকার অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। যুক্তরাজ্যের এনসিএ ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্তে সক্রিয় ও সম্পদ ফ্রিজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ড. ইউনূস বলেন, টিউলিপের ফ্ল্যাট নিয়ে তদন্তের বিষয়টি বিশ্বমঞ্চে দৃষ্টান্ত হবে। কারণ এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়, বরং দুর্নীতির নিরেট প্রমাণসাপেক্ষ তদন্ত।

আরও পড়ুন>>>টিউলিপকে বরখাস্তের আহবান ব্রিটিশ বিরোধীদলীয় নেতার

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর টিউলিপের পদত্যাগের দাবি করেছেন বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে। দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই যদি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হন, তবে তা লজ্জাজনক।

টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য, তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেয়া। কিন্তু তার জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। যেখানে তিনি ও পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সূত্র: সানডে টাইমস, বিবিসি

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়