Apan Desh | আপন দেশ

পায়ে হেঁটে বিধ্বস্ত উত্তর গাজায় ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

পায়ে হেঁটে বিধ্বস্ত উত্তর গাজায় ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা

ছবি : সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরও নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছিলেন না ফিলিস্তিনিরা। বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল হামাসের হাতে জিম্মি বেসামরিক ইসরাইলি আরবেল ইয়াহুদ। রোববার (২৬ জানুয়ারি) আরবেলসহ আরও ছয় ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায় ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরতে পারবে। 

এরপর  গাজার উত্তরাঞ্চলের প্রবেশ পথ খুলে দেয়ার পর তিন লাখের বেশি ফিলিস্তিনি প্রবেশ করেছে। হেঁটে বাড়িতে ফিরেছেন তারা। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন লাখেরও বেশি মানুষ গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করেছে।

গাজা নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেছে, স্থানীয় সময় সকাল নয়টায় চেকপয়েন্টগুলো খুলে দেয়ার পর পায়ে হেঁটে প্রবেশের জন্য অনুমতি দেয়া হয়। সীমান্ত খুলে দেয়ার পর দুই ঘণ্টায় ২ লাখেরও বেশি মানুষ পায়ে হেঁটে উত্তর গাজায় প্রবেশ করেছে।

এর আগে স্থানীয় সময় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সামরিক অঞ্চল নেতজারিম করিডোর গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এর দুই ঘণ্টা পর পায়ে হেঁটে প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। 

বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবেশ পথ খুলে দেয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই দুই লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ পায়ে হেঁটে গাজায় ফিরেছে। গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘরে ফিরতে সহযোগিতা করার জন্য সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মী নিয়োগ করেছে ফিলিস্তিনি সরকার।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গাজা এবং এর উত্তরে ফিরে আসা বাস্তুচ্যুতদের জন্য প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার তাঁবু নির্মাণ প্রয়োজন। কেননা সেখানকার ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িগুলো এখন আর থাকার থাকার উপযোগী নেই।

বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা এ মুহূর্তটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মতোই আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। এটিও তাদের জন্য একটি বিজয়ের দিন।
 
আজকের দিনটিকে ‘বিজয়ের দিন’ উল্লেখ করে উত্তর গাজায় ফিরে আসা বাস্তুচ্যুত এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আমি আমার ঘর পুনর্নির্মাণ শুরু করব। আমরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আবার নতুন করে তৈরি করব।’
 
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ছয় সপ্তাহের ধাপে হামাস ৩৩ জন নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও আহত বন্দিকে মুক্তি দেবে, যেখানে প্রতি বেসামরিক জিম্মির জন্য ইসরাইল ৩০ জন বন্দি এবং প্রতি সেনার জন্য ৫০ জন বন্দি মুক্তি দেবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৭ হাজার ৩১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এক লাখ ১১ হাজার ৪৯৪ জন আহত হয়েছে।

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।

ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বর্বর এ বাহিনীর নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়