Apan Desh | আপন দেশ

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে ফের ধাক্কা খেলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ০৯:৫৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে ফের ধাক্কা খেলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন–সংক্রান্ত কঠোর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের স্বয়ংক্রিয় অধিকার রদের প্রচেষ্টা আরেকটি বড় ধাক্কা খেল। এ সংক্রান্ত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছেন তৃতীয় এক ফেডারেল বিচারক। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি মার্কিন জেলা বিচারক জোসেফ লাপ্লান্তে এ আদেশ দেন। 

গত সপ্তাহে সিয়াটল ও মেরিল্যান্ডের বিচারপতিদের দুজনের একইরকম রায়ের পর নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিসট্রিক্ট বিচারপতি জোসেফ এন ল্যাপলান্ট এ রায় দিলেন। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের দায়ের করা এক মামলায় দাবি করা হয়, ট্রাম্পের আদেশ সংবিধানকে লঙ্ঘন করছে এবং আমেরিকার সংবিধানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মূল্যবোধকে পালটে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের মনোনীত বিচারক লাপ্লান্তে বলেন, আমি এ আদেশ স্থগিত করছি। আপনাদের বক্তব্য শোনার আগেই আমি প্রায় নিশ্চিত ছিলাম যে এটি করব, তবে আপনাদের যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ দিতে চেয়েছিলাম এবং কিছু প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম।

ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার প্রথম দিনেই এ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্ম নেয়া শিশুদের নাগরিকত্ব পাওয়ার ১৪তম সংশোধনী সীমিত করতে চায়। এটি এমন শিশুদের নাগরিকত্ব দেবে না যাদের বাবা-মা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী আইনি মর্যাদা রাখেন না।

এ পদক্ষেপ যা প্রশাসনের প্রাথমিক অভিবাসন নীতির অংশ ইতোমধ্যেই নয়টি মামলার সম্মুখীন হয়েছে। মামলাগুলোর যুক্তি, সুপ্রিম কোর্ট দীর্ঘদিন ধরে সংবিধানের এ গ্যারান্টি ব্যাখ্যা করেছে এবং এতে কেবল কিছু সীমিত ব্যতিক্রম আছে।

লাপ্লান্তের আদেশটি আসে সিয়াটল এবং মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেল্টের ফেডারেল বিচারকদের দেয়া একই ধরনের স্থগিতাদেশের পর। যা গত সপ্তাহে পৃথক আইনি চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে জারি হয়। বোস্টনের এক বিচারকও চতুর্থ স্থগিতাদেশ জারির বিষয়টি বিবেচনা করছেন।

সোমবার লাপ্লান্তে তার রায় দেয়ার সময় সিয়াটলের বিচারকের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়াও দেন। সিয়াটলের মার্কিন জেলা বিচারক জন কফেনোর ট্রাম্প প্রশাসনকে আইনের শাসনকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করার অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আইনের শাসন যেন ট্রাম্পের নীতিগত লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি বাধা মাত্র।

লাপ্লান্তে বলেন, আমি আসামিপক্ষের যুক্তিতে সন্তুষ্ট নই, এ কারণেই আমি এ আদেশ স্থগিত করছি। তবে একজন আইনজীবী এবং বিচারক হিসেবে আমি তাদের বক্তব্যে কোনো ব্যক্তিগত অবমাননা খুঁজে পাইনি।

এ মামলাটি তিনটি নাগরিক অধিকার সংস্থার দ্বারা দায়ের করা হয়েছিল, যাদের পক্ষে আদালতে প্রতিনিধিত্ব করেছে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলিউ)।

এসিএলিউ-র ইমিগ্র্যান্টস রাইটস প্রোজেক্টের ডেপুটি ডিরেক্টর কোডি ওফসি আদালতে বলেন, ট্রাম্পের এ আদেশ সংবিধানের ওপর একটি মৌলিক আঘাত।

তিনি আরও বলেন, এটি হাজার হাজার যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া শিশুকে তাদের সমাজের সমান সদস্যপদ থেকে বঞ্চিত করার হুমকি সৃষ্টি করছে এবং তাদের পরিবারগুলোর ওপর গুরুতর ক্ষতির বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।

ন্যায়বিচার বিভাগ (ডিওজে) আদালতে পূর্বের জন্মগত নাগরিকত্ব বিষয়ক মামলাগুলোর মতো একই যুক্তি উপস্থাপন করেছে। তাদের দাবি, অস্থায়ী অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তানদের পরিস্থিতি অনেকটা সে নেটিভ আমেরিকানদের মতো। যারা ১৪তম সংশোধনীতে স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা পাননি।

প্রসঙ্গত, ১৯২৪ সালে 'ইন্ডিয়ান সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট' পাস করে কংগ্রেস নেটিভ আমেরিকানদের নাগরিকত্ব প্রদান করে। তবে এটি সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত কোনো অধিকার নয়।

ন্যায়বিচার বিভাগের আইনজীবী ড্রু এনসাইন বলেন, তাদের (বাদীপক্ষের) দেয়া ব্যাখ্যার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে কোনো গ্রহণযোগ্য আইনগত ভিত্তি নেই, যা তাদের পক্ষে রায় পাওয়ার সুযোগ দিতে পারে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়