
ছবি : সংগৃহীত
দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দখলদার বাহিনীর এ হামলায় আরও তিন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও সাতজন। বিধ্বস্ত ভূখণ্ডটির ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ৭ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে উপত্যকাটিতে মোট নিহতের সংখ্যা ৪৮ হাজার ৪৫০ ছাড়িয়ে গেছে।
শনিবার (৮ মার্চ) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। বেশ কয়েকটি চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দক্ষিণ ও উত্তর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও সাতজন আহত হয়েছেন।
চিকিৎসা সূত্র আনাদোলুকে জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পূর্বে আবু হালাওয়েহ এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি ড্রোন এই হামলা চালিয়েছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন।
তারা আরও জানিয়েছে, গাজা-মিসর সীমান্তে ফিলাডেলফি করিডোরে অবস্থানরত ইসরায়েলি সামরিক যানবাহন দক্ষিণ ও মধ্য রাফায় ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। এছাড়াও পূর্ব রাফাহতে আল-সালাম পাড়ায় একটি ইসরায়েলি ট্যাংক বাড়িঘরে শব্দ বোমা নিক্ষেপ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানিয়েছেন, গাজা শহরের পূর্ব সীমান্তের কাছে অবস্থানরত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যানবাহনগুলোও তীব্র গুলিবর্ষণ করেছে। পৃথকভাবে উত্তর গাজার বেইত হানুন শহরে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার সময় বুলডোজার লক্ষ্য করে একটি ইসরায়েলি ড্রোন হামলা চালালে সাতজন ফিলিস্তিনি আহত হন।
একটি মেডিকেল সূত্র আনাদোলুকে জানিয়েছে, আহতদের উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আরও ৭ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ৪৮ হাজার ৪৫৩ জনে পৌঁছেছে বলে শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে গত ৪৮ ঘণ্টায় ছয়জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন এবং তারাও প্রাণহানির এ সংখ্যার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া আহত আরও আটজনকে হাসপাতারে ভর্তি করা হয়েছে। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আক্রমণে আহতের মোট সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৮৬০ জনে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এ যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।