
ছবি : সংগৃহীত
একতরফা ভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এমর পরিস্থিতিতে পাল্টা আঘাত হেনেছে হামাস। স্থানীয় সময় রোববার (০৬ এপ্রিল) রাতে দক্ষিণ ইসরায়েলের দিকে ১০টি রকেট ছুড়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেড হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তারা বলেছে, গাজা উপত্যকায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের বর্বর হামলার জবাবে রকেট ছোড়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ১০টির মধ্যে পাঁচটি রকেট তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিহত করেছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানিয়েছে।
আইডিএফ আরও জানিয়েছে, বাকি রকেটগুলোর মধ্যে অন্তত একটি আশকেলন শহরে আঘাত হানে, যেখানে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এছাড়া ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি রকেটের ধ্বংসাবশেষে হালকা আহত হন। তাকে শহরের বারজিলাই হাসপাতালে নেয়া হয়। আরও দুইজন মানুষ বাঙ্কারের দিকে দৌড়ে যাওয়ার সময় আহত হন। বেশ কয়েকজনকে আঘাতের ফলে তীব্র উদ্বেগের জন্য চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
রাত ৯টার কিছু পর মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে রকেটগুলো আশকেলন ও আশদোদ উপকূলীয় শহরের দিকে ছোড়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, রকেট আশকেলনে একটি বহুতল আবাসিক ভবনের কাছে আঘাত হানে।
রকেট হামলার দায় স্বীকার করেছে হামাস। ইসরায়েল সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেয়, এ হামলায় চড়া মূল্য দিতে হবে হামাসকে। যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার জন্য বিমানে উঠেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কার্টজকে এ হামলার কঠোর জবাব দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি। তার অফিস জানিয়েছে, তিনি গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন।
এরপরপরই এক বিবৃতিতে কার্টজ জানান, তিনি আইডিএফকে ‘চলমান অভিযান চালিয়ে যেতে এবং সম্প্রসারিত করতে’ নির্দেশ দিয়েছেন। হামলার পর আইডিএফ-এর আরবি ভাষার মুখপাত্র কর্নেল অভিচাই আদরায় দেইর আল-বালাহ এলাকার ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য সরাসরি এক ‘চূড়ান্ত সতর্কবার্তা’ জারি করেন।
এদিকে গেল ২০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছে ৪৯০ শিশু। উপত্যকাটির মিডিয়া অফিস বলছে, পরিকল্পিতভাবে শিশুদের হত্যা করছে ইসরাইলি সেনারা। রোববারও তাদের হাতে শিশুসহ অনেক ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন।
গাজায় চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে হাজারো মানুষ জড়ো হয় প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় হামলা বন্ধ করতে হবে এবং শিশু হত্যার বিচার আন্তর্জাতিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ফিলিস্তিপন্থি বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সময় সোমবার বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ডাক দেয়া হয়েছে ধর্মঘটের।
এরমধ্যেই যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের লেবার দলীয় দুই আইনপ্রণেতাকে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদের আটক করা হয়েছিল।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।