
সংগৃহীত ছবি
কাশ্মীর উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারত আটারি সীমান্ত বন্ধ করে। এরপর বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তান সরকার ওয়াগা সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি দেশটির মধ্য দিয়ে তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে ভারতের সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে ইসলামাবাদ।
উদ্ভূত ঘটনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনলাইন ডন এ খবর দিয়েছে।
এতে বলা হয়, ভারতের ‘আগ্রাসী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে’ এনএসসি কি ব্যবস্থা নেয়া যায় তা নির্ধারণ করতে বৈঠক আহবান করে। এতে সভাপতিত্ব করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। বৈঠকে যোগ দেন সামরিক ও বেসামরিক শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তাতে পহেলগাঁও হামলার পর আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে আলোচনা করা হয়। একই সঙ্গে ওয়াগা সীমান্ত বন্ধ করাসহ আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশন কর্মী সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ এ নামিয়ে আনবে। নয়াদিল্লিতে পাক হাইকমিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাদের নন গ্রাটা ঘোষণা করে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রধান সীমান্ত চেকপোস্ট অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়া হবে। বিশেষ ভিসা ব্যবস্থার অধীনে পাকিস্তানি নাগরিকদের আর ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হবে না। কেন্দ্রের ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা মেনে বৃহস্পতিবার অমৃতসরের আটারি-ওয়াঘা স্থলপথ দিয়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেন বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিক।
এদিকে আজ প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে পাক সরকার বলছে, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখার ভারতীয় ঘোষণাকে পাকিস্তান তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে। পাকিস্তানকে বরাদ্দকৃত পানি প্রবাহে বাধা দেয়া বা চুক্তি স্থগিত করা ‘যুদ্ধের শামিল’ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পাকিস্তান দেশটিতে থাকা ভারতীয় সামরিক উপদেষ্টাদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে ভারতের সব ধরনের বাণিজ্য অবিলম্বে স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে ভারতের মন্ত্রিপরিষদের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) আজ বৈঠকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পাঁচটি পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
এরপর বৃহস্পতিবার ভারতীয় মেডিকেল ভিসা-সহ পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে ভারত। এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইতোমধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য জারি করা সব ধরনের বৈধ ভারতীয় ভিসা আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) থেকে বাতিল হয়ে যাবে।
এছাড়া ওই দেশের নাগরিকদের দেয়া সকল মেডিকেল ভিসাও মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পর্যন্ত বৈধ থাকবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থানরত সকল পাকিস্তানি নাগরিককে সংশোধিত এ সময়সীমার মধ্যে অবশ্যই ভারত ত্যাগ করতে হবে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলেছে, যেসব পাকিস্তানি নাগরিকের কাছে ভারতীয় ভিসা রয়েছে, তারা ভারত ত্যাগ করার জন্য ৭২ ঘণ্টার সময় পাবেন। ভিসা বাতিলের পাশাপাশি পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা পরিষেবাও স্থগিত করেছে ভারত। এর ফলে পাকিস্তানি নাগরিকরা ভারত ভ্রমণের জন্য কোনও ধরনের নথি পাবেন না।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।