বিচারকের কাণ্ড: পুলিশ দিয়ে আসামি পুলিশের গালে থাপ্পড় দেয়ালেন, অতঃপর

লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নারী বিচারকের নির্দেশে এক পুলিশ আসামিকে আরেক পুলিশ দিয়ে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে আদালত বর্জন করে আইনজীবীরা বিচারককে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। 

বুধবার(১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মুকুল জানান, মামলার শুনানির পর আসামি আবদুল্লাহ আল মামুনকে (৪২) ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জামান এজলাসে ডেকে নেন। এরপর আসামি মামুনের গালে এক কনস্টেবলকে দুটি থাপ্পড় দিতে বলেন। ওই কনস্টেবল মামুনকে থাপ্পড় দেন। মামুনও পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় একটি প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে এজলাসে থাপ্পড় দেয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আইনগত প্রতিকার চেয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন মামুন। একই সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছেও তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। চট্টগ্রামের মীরসরাই থানার মোবারকঘোনা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে মামুন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জে কর্মরত। 

মামুনের স্ত্রী সুমাইয়া সুলতানা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামীর নামে মামলা করেন। মামলাটি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আদালতে বিচারাধীন। মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন বাদীপক্ষ দুই সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করেন। সাক্ষীর জেরা শেষে মামুন বারান্দায় যান। এ সময় তাকে স্ত্রী ও তার মা মারধর করেন। বিষয়টি তিনি বিচারক নুসরাত জামানকে জানান। কিন্তু বিচারক কথা না শুনে তাকে ডেকে নেন এবং তাকে দুটি চড় মারার নির্দেশ দেন। বিচারপ্রার্থী জনগণের সামনে কনস্টেবল কবির তাকে দুটি চড় মারেন। এ সময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণও করা হয়। তাকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে চড় দিয়েছি, এখন আমি নিজে তোকে চড় মারব। পরে মামুনকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

আইনজীবী আবদুর রহিম রাজু সাংবাদিকদের বলেন, কনস্টেবলকে দিয়ে আসামিকে থাপ্পড় দিয়েছেন বিচারক। এটি আইনবহির্ভূত। এ ঘটনায় আইনজীবী সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে-নুসরাত জামানের আদালতে কোনো আইনজীবী যাবেন না। তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমরান হোসেন ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, লিখিত অভিযোগের ঘটনাটি জানা নেই। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারছি না।

আপন দেশ/এবি