ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় রাজনৈতিক মিছিল, সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আবদুল্লাহ আল মামুনের (কৌশিক) পক্ষে রিট পিটিশন দায়ের করেন ব্যারিস্টার মো. সানোয়ার হোসেন। এ বিষয়ে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ডিএমপি কমিশনারকে নিষ্পত্তির জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে।
রিট পিটিশনে উল্লেখ করা হয়, বায়তুল মোকাররম ইফা নিয়ন্ত্রণাধীন। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে এটি। ধর্ম মন্ত্রণালয় আওতাধীন প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশন। জাতীয় মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
নান্দনিক এ মসজিদের অভ্যন্তরে ওজুর ব্যবস্থাসহ পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও পৃথক নামাজ কক্ষ ও পাঠাগার রয়েছে। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত ছাড়া জুমা ও ঈদে বাড়তি ৩৯, ৮৯৯ বর্গফুটে নামাজ পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
বিগত কয়েক বছর ধরে প্রায় প্রতি শুক্রবারই বায়তুল মোকাররম এলাকায় জুমার নামাজের পর বিভিন্ন ইসলামিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ব্যানারে সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সেসবে অংশগ্রহণের জন্য আগত ব্যক্তিরা নামাজ শেষের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের ভেতর থেকেই স্লোগান দেন। পরে একযোগে মসজিদ সংলগ্ন সিঁড়ির ওপর অবস্থান নেন। এরকম হুড়োহুড়িতে মসজিদে আসা সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আতঙ্ক বোধ করেন। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। ফলে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাগ্রস্ত হন তারা।
অনেক ক্ষেত্রে মসজিদের বাইরে বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ফলে অনেকে আহত ও নিহত হন। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস হয়। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ এরূপ সংঘর্ষে ব্যাপক জানমালের ক্ষতি হয়।
সংবিধানের ৪১ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা সাপেক্ষ, (ক) প্রত্যেক নাগরিকের যেকোনও ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে; (খ) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে।
বায়তুল মোকাররমে নিয়মিত সংঘর্ষের ফলে সাধারণ মুসল্লিরা নামাজ আদায়ে আতঙ্কিত থাকেন। যা সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ পরিপন্থি। মসজিদ কোনও রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয় নয়, মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষের ইবাদতের স্থান।
এসব বিস্তারিত উল্লেখ করে রিটকারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডিএমপিকে বায়তুল মোকাররম ও সংলগ্ন এলাকায় সবধরনের বিক্ষোভ, সভা, সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ করার আদেশ দেয়ার জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিপক্ষরা কোনও পদক্ষেপ না নেয়ায় এ রিট পিটিশন দায়ের করা হয়।
কোনও মসজিদ রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয় নয়, মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষের ইবাদতের স্থান। তাই এ রিট পিটিশনে প্রার্থনা করা হয়, বায়তুল মোকাররমসহ অন্যান্য সব মসজিদ ও সংলগ্ন এলাকায় সবরকম সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হোক।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।