আপন দেশ। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। এরই মধ্যে আড়ালে আবডালে কর্মকাণ্ড চালিয়েছে রাজনৈতিক সংগঠন। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশের সবোর্চ্চ এ বিদ্যাপীঠটি। ক’দিন আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালায়। এতে ফুঁসে ওঠে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চলবে বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার (১ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে, এদিন ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি করার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বুয়েটে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বি। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, রাজনীতি বন্ধ করে যে নোটিশ দিয়েছিল, তা স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শেরেবাংলা হলে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে জোরালোভাবে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি ওঠে।
সে সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কাগজে-কলমে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রতিষ্ঠানটিতে এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ হয়নি রাজনীতি। বরং ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ফায়দা নিচ্ছে উগ্রবাদী রাজনৈতিক সংগঠন।
এদিকে গত ২৮ মার্চ মধ্যরাত থেকে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বুয়েট। ক্যাম্পাসে রাজনীতির বীজ বপনের চেষ্টা হচ্ছে এমন অভিযোগ আনা হয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এরপর শুক্রবার (২৯ মার্চ) থেকে আন্দোলনে নামেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এরও আগে ২০০২ সালে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে সাবেকুন নাহার সনি নিহত হওয়ার ঘটনায় বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি দানা বেঁধেছিল।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে জঙ্গিবাদ, অপরাজনীতি কারখানায় পরিণত করা হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে। সেই রকম হলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আজকে আমি রাজনীতি করি, সেখানে বুয়েটে যেতে পারব না? এটি কোন ধরনের আইন? এটি কোন ধরনের নীতি?’
ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতার ইঙ্গিত ও তাদের ছাত্রসংগঠনের নেতাদের এ ধরনের বক্তব্যের পর ছাত্ররাজনীতি নিয়ে অনেকটা নমনীয় সুরে কথা বলেছেন বুয়েট উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে ক্যাম্পাসে আবারো ছাত্র রাজনীতি চালু করা যেতে পারে। পূর্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যদি বুয়েটে রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তবে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হলে তাদেরই আবার উদ্যোগী হতে হবে। এজন্য রাজনীতি শিখতে হবে। তারা যদি চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেন, তখন হয়তো রাজনীতি চালু হতে পারে।’
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।