ফাইল ছবি
বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না করে বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনির বাসিন্দাদের উচ্ছেদ অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে আগামী দুই মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত রুল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) আবেদন করেছিল। এর শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে হরিজনদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন। এছাড়া ছিলেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, আইনুন নাহার সিদ্দিকা, মনজ কান্তি ভৌমিক ও আইনজীবী উৎপল বিশ্বাস। আর সিটি করপোরেশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুরাদ রেজা।
আইনজীবীরা সাংবাদিকদের বলেন, বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে ডিএসসিসি নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেয়। এজন্য হরিজন কলোনিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ মোতায়েন করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়।
গত মঙ্গলবার সিটি করপোরেশন এ চিঠি দেয়। পাশাপাশি স্থানীয় কাউন্সিলরকে এ বিষয়ে সহায়তা করতে বলা হয়। এরপর আবারও হরিজন কলোনিতে অভিযান শুরুর উদ্যোগ নিলে সেখানে বসবাসরত হরিজনদের পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন<<>> কোটা আন্দোলনকারীদের জন্য আদালতের দরজা খোলা: প্রধান বিচারপতি
শুনানি শেষে আপিল বিভাগ সিটি করপোরেশনের অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। একই সঙ্গে ১১ জুলাই আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৩ জুন বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের ওপর এক মাসের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি বসবাসের বিকল্প ব্যবস্থা না করে হরিজনদের উচ্ছেদ না করতে নির্দেশ দেন আদালত। ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি হয়। শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ অভিযান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এরপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে সিটি করপোরেশন। পরে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে ‘নো অর্ডার’ দেন।
আইনজীবীরা জানান, ব্রিটিশ আমলে ভারতের তেলেগু এলাকা থেকে আসা এ হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন শত বছরের বেশি সময় ধরে এ কলোনিতে বসবাস করে আসছেন।
মিরনজিল্লার সুইপার কলোনিতে বর্তমানে প্রায় চার হাজার লোক বাস করেন। এ কলোনির একটি অংশর আধুনিক কাচাবাজার নির্মাণ করতে চায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এজন্য সেখানে থাকা স্থাপনা উচ্ছেদে যান সংস্থাটির কর্মকর্তারা। তারা হরিজন সম্প্রদায়ের তীব্র আপত্তি ও বাধার মুখে পড়েন। পরে তারা একটি দেয়াল ও কয়েকটি স্থাপনা ভেঙে চলে যান।
সিটি করপোরেশনের এ উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে সেখানে বিক্ষোভ করে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।