মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে ইফাত
গত ঈদুল আজহায় ছাগলকাণ্ডে বহুল আলোচিত সাবেক এনবিআর সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ গ্রেফতার হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশের একটি দল।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে এ দম্প্রতির গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তবে কোন মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আলোচিত এ দম্পতির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সবশেষ গত ৬ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুদক।
গত বছর কোরবানির জন্য রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদেক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে ইফাত। তবে শুরুতে ইফাতকে ছেলে হিসেবে পরিচয় দেননি মতিউর রহমান। পরে ফেনী-২ আসনেরেএমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী জানান, ইফাত তার মামাতো বোনের সন্তান। আর মতিউর রহমানই ইফাতের বাবা। নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেছেন, ইফাত এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে।
ছাগল ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার মতিউর গরু কিনেছেন বলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে উঠে আসে। এরপর থেকে তার দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন, মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
উল্লেখ্য, মতিউর রহমান কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকও ছিলেন তিনি। ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর তাকে এসব পদ ছাড়তে হয়।
এরপর মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় সংস্থাটি। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ করা হয়।
পরে ২৪ জুন মতিউর ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এরপর গত ২ জুলাই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েসহ পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।