
ফাইল ছবি
নাবিল গ্রুপ চেয়ারম্যানসহ তাদের চার প্রতিষ্ঠানের ১৭৮ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এিআদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ এলা।
নাবিল গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম। তার স্ত্রীর নাম ইসরাত জাহান দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আপন দেশকে জানান, আমিনুল ইসলাম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ থাকায় তাদের সম্পদ জব্দের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
জব্দকৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে, আমিনুল ইসলামের ১৩২ বিঘা জমি,তার স্ত্রী ইসরাত জাহানের ২৩ বিঘা জমি,নাবিল ফার্মা লিমিটেডের ১৩ বিঘা,আনোয়ার ফিড মিলস লিমিটেডের প্রায় ১ বিঘা,নাবিল গ্রেট হোমস লিমিটেডের প্রায় ৯ বিঘা,নাবিল নাবা ফুডসের ৮ শতক জমি।
দুদকের পক্ষে উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন<<>> এবার জলিলে ডুবছে ইসলামী ব্যাংক!
আবেদনে বলা হয়, নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম, তার পরিবারের সদস্যরা এবং সম্পর্কযুক্ত প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতি, প্রতারণা ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন। তা আত্মসাত ও মানিলন্ডারিং করেছেন-যার অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধান পর্যায়ে প্রাপ্ত তথ্যে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কিছু স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব স্থাবর সম্পদসমূহ যে কোনোভাবে বিক্রয় বা হস্তান্তর হয়ে যেতে পারে।
মানিলন্ডারিং অপরাধে অনুসন্ধানের শেষ পর্যন্ত এসব সম্পদের কোনোরূপ হস্তান্তর, রূপান্তর বা স্থানান্তর বন্ধ করা প্রয়োজন। নতুবা অনুসন্ধান পরবর্তী আইনি কার্যধারা গ্রহণসহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অপরাধলব্ধ অর্থ পুনরুদ্ধার বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের এসব স্থাবর সম্পত্তিসমূহ জব্দ করা আবশ্যক।
উল্লেখ, নাবিল গ্রুপকে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে সাডে ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। তৎকালে আপন দেশসহ গণমাধ্যমে ফলাও করে খবর প্রকাশিত হয়।
দুর্নীতির সারাংশ:
ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালে রাজশাহী শাখা নাবিল ফিড মিলস ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে ৩ হাজার ১০০ কোটি ও গুলশান শাখা নাবিল গ্রেইন ক্রপসের নামে ৯৫০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে নাবিল নব ফুড ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান, নাবিল ফিড মিলস এবং শিমুল এন্টারপ্রাইজের নামে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ১২০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেছে এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে।
‘নাবিল গ্রুপ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে পর্যাপ্ত নথিপত্র ও জামানত ছাড়াই প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে তিনটি ব্যাংক। একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ যত টাকা ঋণ দেয়া যায়, তার সীমাও লঙ্ঘন করেছে ব্যাংক তিনটি।
এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক দিয়েছে সবচেয়ে বেশি ৪ হাজার ৫০ কোটি টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ২০০ কোটি এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক দিয়েছে ১ হাজার ১২০ কোটি টাকা। জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ দেয়া এমডি মুহাম্মদ মনিরুল মওলা এখনো ব্যাংকেই বহাল।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।