Apan Desh | আপন দেশ

বুলিং-র‌্যাগিং প্রতিরোধ নীতিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:১৯, ১৪ আগস্ট ২০২৩

বুলিং-র‌্যাগিং প্রতিরোধ নীতিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশ

ফাইল ছবি

বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধে চূড়ান্ত নীতিমালার অনুলিপি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন মাসের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নীতিমালায় উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো ৬ মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি চূড়ান্ত নীতিমালার গেজেটের অনুলিপি হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

গত ২৯ জুন গেজেট জারি করা হয়। চূড়ান্ত নীতিমালায় বুলিং-র‌্যাগিংয়ের অপরাধে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং গভর্নিং বডির সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, বুলিং-র‌্যাগিংয়ের মাত্রা অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে।

চূড়ান্ত নীতিমালায় মৌখিক বুলিং-র‌্যাগিংয়ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে—কাউকে উদ্দেশ করে মানহানিকর বা অপমানজনক এমন কিছু বলা বা লেখা, যা খারাপ কোনও কিছুর প্রতি ইঙ্গিত বহন করে ইত্যাদিকে মৌখিক বুলিং বুঝাবে। যেমন- উপহাস করা, খারাপ নামে সম্বোধন করা বা ডাকা, অশালীন শব্দ ব্যবহার করা, গালিগালাজ করা, হুমকি দেওয়া, শারীরিক অসমর্থতাকে নিয়ে উপহাস করা বা অনুরূপ কার্যাদি।

আরও পড়ুন: আইডিয়ালের দাতা সদস্য মুশতাকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

শারীরিক বুলিং ও র‌্যাগিংয়ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে—কাউকে কোনও কিছু দিয়ে আঘাত করা, চড়-থাপ্পড় মারা, শরীরে পানি বা রঙ ঢেলে দেয়া, লাথি মারা, ধাক্কা মারা, খোঁচা দেয়া, থুতু মারা, বেঁধে রাখা। কোনও বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বা বসে বা বিশেষ অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেয়া, অথবা কোনও কিছু করতে বা না করতে বাধ্য করা। কারও কোনও জিনিসপত্র জোর করে নিয়ে যাওয়া বা ভেঙে ফেলা, মুখ বা হাত দিয়ে অশালীন বা অসৌজন্যমূলক অঙ্গভঙ্গি করা বা অনুরূপ কার্যাদি।

সামাজিক বুলিং ও র‌্যাগিংয়ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে—কারও সম্পর্কে গুজব ছড়ানো, কাউকে অপমান করা, ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোত্র, পেশা, গায়ের রঙ, অঞ্চল বা জাত তুলে কোনও কথা বলা বা অনুরূপ কার্যাদি।

পরে বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধে চূড়ান্ত নীতিমালার গেজেটের অনুলিপি হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

প্রসঙ্গত, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার পর ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে ‘বুলিং’ ও শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয়ে একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরির জন্য অতিরিক্ত শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেন আদালত। নির্দেশ অনুযায়ী এই কমিটি একটি নীতিমালা খসড়া করে ২০১৯ সালে আদালতে দাখিল করে। এরপর নীতিমালা কয়েক দফা সংশোধন, পরিমার্জন, সংযোজন-বিয়োজন করা হয়।

এদিকে ২০২১ সালে বুলিং নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভির আহমেদের রিটে একই বছরের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। ‘বুলিং’ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং রোধে নীতিমালা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। বিষয়বস্তু একই হওয়ায় দুটি মামলা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয় পঞ্চম দফায় নীতিমালার খসড়া জমা দেয়। কিন্তু কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সেসব বিষয় সংশোধন, পরিমার্জন করে নীতিমালাটি চূড়ান্ত করতে আদালত ফের সময় দেন। সোমবার সকালে চূড়ান্ত নীতিমালার গেজেটের অনুলিপি হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়