ছবি: সংগৃহীত
রোজায় দীর্ঘ সময় পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হয়। এতে পানিশূন্যতাসহ নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় অনেকের। শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে জিহ্বা শুকিয়ে যায়। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া, হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া, প্রেসার কমে যাওয়া কিংবা দুর্বলতার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নিয়মিত পরিমাণমতো পানি ও পানি জাতীয় খাবার খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। ইফতার থেকে সেহরি- এ সময়ের মধ্যে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের গড়ে ২-২.৫ লিটার পানি পান করতে হবে। এক্ষেত্রে ছোট্ট একটি ফর্মুলা হচ্ছে, যার যত ওজন সেই সংখ্যাকে ৩০ দিয়ে ভাগ করে প্রাপ্ত ভাগফলের সমান লিটার পানি কমপক্ষে তাকে এ সময়টুকুর মধ্যে খেতে হবে।
রোজার সুস্থ ও পানিশূন্যতামুক্ত থাকতে চাইলে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। পরামর্শ দিচ্ছেন বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল ও ইবনেসিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ক্লিনিক্যাল ডায়াটিশিয়ান ও নিউট্রিশন কনসালটেন্ট ফাতেমা সিদ্দিকী ছন্দা।
১. ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত সময়ে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি খেতে হবে অবশ্যই। প্রতিবেলা খাওয়ার ১০ মিনিট আগে ও কিছুক্ষণ পরে ১ গ্লাস করে পানি খেতে হবে। খাওয়ার মাঝখানে পানি খাবেন না কিংবা একবারে অতিরিক্ত পরিমাণ পানি খেয়ে ফেলবেন না।
২. রোজায় সময় খাদ্য তালিকায় এমন খাবার রাখবেন যেগুলো সহজে হজম হয়। ভাজাপোড়া কিংবা রিচ ফুড শরীরকে আরও পানিশূন্য করে তোলে।
৩. ইফতার মেন্যুতে পানিজাতীয় খাবার ও ফল রাখুন। বেশি করে খেতে পারেন শসা ও তরমুজ। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। সঙ্গে থাকতে পারে শরবত।
৪. ডাবের পানি খেতে পারেন প্রতিদিন। প্রয়োজনে স্যালাইন খান।
৫. প্রয়োজন ছাড়া রোদে যাবেন না কিংবা রোজা রেখে ভারি ব্যায়াম করতে যাবেন না। এতে ঘাম বেশি হয়ে পানিশূন্যতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা থাকে।
৬. ইফতারের পর অতিরিক্ত চা কিংবা কফি খাওয়া অনুচিত।
৭. অনেকেই ইফতারের পর ফ্রিজে রাখা অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করেন, এই বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
৮. নিয়মিত গোসল করতে হবে, খুব খারাপ লাগলে চোখেমুখে পানির ঝাপ্টা দিতে পারেন।
৯. টকদই ও লাচ্ছি যোগ করতে পারেন ইফতারে।
১০. খেজুর, ফল, জুসের সঙ্গে ইফতারে রাখতে পারেন পান্তাভাত, যা সারাদিনের রোজার শেষে আপনার দেহে পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
১১. ডায়রিয়া বা জ্বর বা অতিরিক্ত বমি হলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
আপন দেশ/এসএমএ