ছবি: সংগৃহীত
ঈদযাত্রার পঞ্চম দিন আজ। অনেকেই ইতোমধ্যে জ্যামের শহর ঢাকা ছাড়ছেন। শহর ছাড়ার ধুমে বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষদের সড়কে জ্যামে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটাতে হয়। এ গরমে জ্যামে বসে থাকার মতো অস্বস্তিকর আর বিরক্তের মতো অন্যকিছু আছে কিনা বলা ভার।
তবে এ সময়টিতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে সময় নষ্ট না করে অবস্থার সঙ্গে জীবনকে মানিয়ে নেয়াই উত্তম। সেক্ষেত্রে চলুন জেনে নেই কীভাবে অস্বস্তিকর গরমে জ্যামে বসে অযথা বিরক্ত না হয়ে সময়টাকে আনন্দময় ও অর্থবহ করে তুলতে পারেন-
পূর্বপ্রস্তুতি নেয়া
শিক্ষার্থী বা কর্মজীবী সকলেই গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়-পরিজনদের সাথে ঈদ করার জন্য যাত্রা করেন। জ্যামে আটকে থাকার সময়টিতে সেই ঈদকে ঘিরে আনন্দময় কিছু পরিকল্পনা এবং ঈদ পরবর্তীতে শহরে ফিরে পড়াশোনা বা কর্মস্থলে যোগদানের পরের কর্মপরিকল্পনার কিছুটা প্রস্তুতি নিতে পারেন। যেমন- শিক্ষার্থীরা জ্যামের সময়টুকু পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। কর্মজীবীরা অফিসের মিটিংয়ের এজেন্ডা, প্রেজেন্টেশন বা ক্লায়েন্টের সঙ্গে মিটিংয়ের বিষয়গুলোর খুঁটিনাটি এ সময় ভালো করে একবার দেখে নিতে পারেন।
আগামীকালের পরিকল্পনা করা
গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে কি কি করবেন, কার সঙ্গে দেখা করতে হবে, কোথায় কোথায় যেতে হবে, লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়গুলোও জ্যামে বসেই ঠিক করে ফেলা যায়। যেহেতু আগামীকাল বাড়িতে থাকবেন, সেহেতু সময় খরচের ব্যাপারেও হিসাব করে রাখা জরুরি। আর তার জন্য আজকের যাত্রার জ্যামে আটকে থাকা মুহূর্তগুলো কাজে লাগিয়ে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
অনলাইনে খবর পড়া
রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে স্থানীয় খবর থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির ব্যাপারে সর্বশেষ খবরটি জানা থাকা উচিত। এমনকি আগামীকালের আবহাওয়া কতটা উষ্ণ থাকবে, ঈদ কি বুধবার নাকি বৃহস্পতিবার হবে- এ নিয়ে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি কিছু তথ্য দিয়েছে কিনা এজন্যও খবরের পোর্টালগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।
ইউটিউবে ভিডিও দেখা
দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক ছোট-খাট কাজ থাকে, যেগুলোর জন্য অন্যান্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু একটু গভীরভাবে ভাবলে দেখা যায় যে কাজগুলো আসলে অতটা কঠিন নয়। একবার দেখে নিলেই যে কেউ নিমেষেই কাজগুলো করতে পারে। বাসা থেকে বেরোনোর সময় হয়তো কোনো ফার্নিচারের ছোট একটি অংশ বেকায়দায় আলাদা হয়ে গেছে, দরজার নব খুলে গেছে, বেসিনের সিঙ্কের পাইপে লিক হয়েছে ইত্যাদি। এগুলোর কীভাবে ঠিক করতে হয় তা জ্যামে বসে নিজেই ইউটিউবে শিখে ফেলা যায়। এতে খরচও বাঁচবে আর স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রেও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া যাবে।
সাধারণ জ্ঞানচর্চা
বয়স অথবা শিক্ষাগত যোগ্যতা যাই হোক না কেন, গুগল করে সাধারণ জ্ঞান চর্চার কাজটির জন্য জ্যামে পড়ে থাকার সময়টা উপযুক্ত।
ইংরেজি ভাষা অনুশীলন
মনে মনে নতুন কোনো শব্দ আওড়ানো অথবা পুরনো শব্দ বা তার প্রতিশব্দ দিয়ে বাক্য গঠনের কাজগুলো বেশ দারুণভাবে করা যেতে পারে। শুধু তাই নয়; জ্যামে আটকে থেকে আশেপাশের দোকানের সাইনবোর্ড, বড় বিলবোর্ড, পোস্টারে ইংরেজি শব্দ খুঁজে বের করে তার প্রতিশব্দ মনে করা বা তা দিয়ে বাক্য রচনা করা যেতে পারে।
গল্প, উপন্যাস বা ব্লগ পড়া
যাদের ভ্রমণের সময় বই পড়ার অভ্যাস আছে, তাদের জ্যামের সময় কাটানোর জন্য এ উপায়টি সেরা। এখন মোবাইলের মধ্যেই পিডিএফ ফাইলে হাজার হাজার পৃষ্ঠার উপন্যাসগুলো সহজেই রাখা যায়। অবশ্য এ কাজটি শুধুমাত্র জ্যামের নীরব একঘেয়ে মুহূর্তগুলোর জন্য। কেননা চেঁচামেচির মধ্যে গল্প বা উপন্যাস যতই আকর্ষণীয় হোক না কেন, তাতে মন বসানো দুষ্কর। বইয়ের পিডিএফ ভার্সন না নিয়ে সোশ্যাল প্লাটফর্মগুলোতে ব্লগ পড়া যেতে পারে। কথোপকথনের ভঙ্গিমায় লেখা সেই ব্লগগুলো দীর্ঘ জ্যামের মধ্যে ঠিক বন্ধুর মতোই সঙ্গ দেবে।
আপন দেশ/এসএমএ