প্রতীকী ছবি
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। আর এ খুশির ঈদ পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করতে নাড়ির টানে গ্রামে বাড়ি ছোটেন অনেকেই। এরই মধ্যে অনেকেই রওনা দিয়েছেন; আবার অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে রওনা দেবেন।
বলা যায়, রাজধানীর এক তৃতীয়াংশ মানুষই গ্রামের বাড়ি ঈদ উদযাপন করতে যান। আবহাওয়ার বৈরিতাকেও উপেক্ষা করে ছুটে যান পরিবারের কাছে। তবে ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই সড়ক ও নৌপথে থাকে প্রচণ্ড ভিড়। এমন ভিড়ে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে।
আর তাই সবাইকে মনে রাখতে হবে ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়ি বা অন্য যেকোন স্থানেই যান না কেন; ভ্রমণ হওয়া চাই নিরাপদ ও আরামদায়ক। এ সময় বিভিন্ন অসাধু চক্র সক্রিয় হয়ে যায়। যারা সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ক্ষতি করে। তাই বাড়ি ফেরার সময় সাবধান থাকা প্রয়োজন।
ঈদযাত্রায় সাবধান থাকতে হবে। যাত্রীরা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে বসেন, এমনকি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরে। এ ব্যাপারটি ভুলে গেলে চলবে না। যাত্রাপথে অপরিচিত কারও দেয়া কিছু খাবেন না। কাউকে সন্দেহ হলে ভদ্রতার সঙ্গে এড়িয়ে চলবেন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বেশ সরব হয়ে উঠেছে একটি চক্রের অসাধু কার্যকলাপের কথা।
জানা যায়, একটা কেমিক্যালের ব্যবহার তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে কিছু অসৎ মানুষের হাতে পড়েছে। এ কেমিক্যালের নাম স্কোপোলামিন। এ কেমিক্যাল দিয়ে সাধারণত সাড়ে ৩ ফিট দূর থেকেও বাতাসের মাধ্যমে মানুষকে আসক্ত করতে পারে। যা মানুষের নাকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে।
ফলে মস্তিষ্কের প্রাইমারি ইনিশিয়াল স্টেজ অফ থিংকিং অর্থাৎ মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। এমনকি মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে সামনে থাকা মানুষের নাচের পুতুল হয়ে যায়। তখন যা কমান্ড দেয়া হবে আক্রান্ত ব্যক্তি তাই করবে। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন সাধারণ মানুষ। তাই ঈদে প্রচণ্ড ভিড়ে বাড়ি ফেরার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন-
- ভ্রমণের জন্য কাঁধে ঝুলানো যায় এমন হ্যাভারসেক, হ্যান্ড ব্যাগে আগেভাগেই সাজিয়ে রাখবেন। ভ্রমণে উপযোগী কাপড়, টুথপেস্ট ব্রাশ, ছোট সাবান, টাওয়েল বা গামছা, বিছানার চাদর, শকনো খাবার এবং সর্বোপরি ডায়াবেটিস হৃদরোগ বা হাপানি- এসব রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি বা তার সংক্ষিপ্ত মেডিকেল হিস্ট্রি ব্যাগে রেখে দিবেন।
- যাত্রাপথে অপরিচিত কারও দেয়া কিছু খাওয়া যাবে না। অপরিচিত কারও সঙ্গে ঘনিষ্টতা না বাড়ানোই ভালো। নিজের কোনো খাবার শেয়ার করবেন না। অন্যের খাবারও খাবেন না।
- বাসা থেকে বের হওয়ার আগে পরিবারের সবাই মাস্ক পরে নিন। আপনার মুখের সামনে অপরিচিত কারও হাত আনতে দিবেন না। হাতটা আপাত দৃষ্টিতে খালি মনে হলেও তা থেকে সতর্ক থাকবেন।
- যেকোনো প্রকার যানবাহনে একা যাত্রী হয়ে উঠবেন না। যেসব গাড়িতে অনেক মানুষ থাকবে সেসব গাড়িতে যাত্রা করুন।
- অপরিচিত কোনো লোক ঠিকানা জানার জন্য কাগজ হাতে দিতে চাইলে তা এড়িয়ে যাবেন। কাউকে নিজের ঠিকানা বা ব্যক্তিগত কথাও শেয়ার করবেন না। এছাড়াও কোনো কাগজে ঠিকানা দেখার কথা বলে আপনার চোখের সামনে আনতেও দেবেন না।
- নিজস্ব ব্যবহৃত জিনিসপত্র কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এতে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়। হাত পাখা, পর্যাপ্ত পানি বা পানীয় সঙ্গে রাখুন। অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরে লবণশূন্যতা দেখা দিতে পারে, তাই ভ্রমণ শুরুর আগে খাবার স্যালাইন, ফলের রস সঙ্গে রাখা ভালো।
আপন দেশ/এসএমএ