ছবি সংগৃহীত
আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় জাদুকরী পাতা হিসেবে গণ্য করা হয় নিমকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানেও প্রমাণ মিলেছে। তবে নিম পাতার হাজারো গুণ থাকলে এ পাতাটি কারো ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাবও রয়েছে।
ভারতের আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ দীক্ষা ভাবসার বলেন, নিম থেকে শতভাগ নির্যাস পেতে বিভিন্নভাবেই নিমকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
যেমন- রূপচর্চায় নিমের পেস্ট হলুদের সঙ্গে প্রলেপ আকারে ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। নিম পাউডার (অন্যান্য ভেষজের সঙ্গে মেশানো বা এককভাবে থাকা), মধু দিয়ে পেস্ট তৈরি করা যেতে পারে। এটি ত্বকে বা ক্ষতস্থানে প্রলেপ আকারে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
গরম পানিতে নিমপাতা ফুটিয়ে তা ঠাণ্ডা করে স্বাভাবিক পানির সঙ্গে মিশিয়ে গোসল করলে ত্বকের সংক্রমণ কমে। খুশকি কমানোর ক্ষেত্রেও এই পানীয় ব্যবহার করা যেতে পারে।
নিমের ভেষজ চা পানীয় হিসেবে পান করলে পেটের নানা সমস্যা কমে যায়। এটি ব্রণ কমাতেও সাহায্য করে। নিমকে ট্যাবলেট, গুঁড়া, রস বা নিম পাতা ভাজা হিসেবে খেতে পারেন। তবে সবচেয়ে কার্যকরী সুফল পেতে নিম পাতা ভাজাই উত্তম। দৈনিক ৭ টি পাতা ভাজা খেতে পারেন।
নিয়মিত এই পাতা খেলে এটি হজম ক্ষমতার উন্নতি করে, ক্লান্তি দূর করে, কাশি কমাতে পারে, ক্ষত তাড়াতাড়ি নিরাময় করতে সাহায্য করে, ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ কমায়, কৃমির সমস্যা দূর করে। বমি বমি ভাব কিংবা বমির উপশম করে প্রদাহ কমাতেও নিম পাতা দারুণ কাজে আসে।
শুধু তাই নয়, নিমপাতা খাওয়ার অভ্যাসে ত্বক পুনরুজ্জীবিত হয়। চোখের বলি রেখা দূর হয়। ত্বকে এন্টি এজিং প্রসেস চালু হয়। চুল ও দাঁতের যত্নেও নিমপাতা বেশ উপকারী। নিমপাতায় ক্যালশিয়াম আর খনিজ উপাদান বৈশিষ্ট্য থাকায় তা হাড় মজবুত করার ক্ষেত্রেও কার্যকরী।
বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, সেপটিক ঘা, সংক্রমিত পোড়া এমন কি ত্বকে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর নিমপাতা। একজিমা, পেটের আলসার কিংবা ত্বকে দাদের মতো চর্মরোগেও চিকিৎসকরা নিমপাতার ওপর ভরসা করেন।
অপর দিকে যাদুকরী নিমপাতার এতসব উপকারী গুণের সঙ্গে এর ক্ষতিকর প্রভাবও রয়েছে। যেমন যদি কারো কিডনি, লিভারের সমস্যা থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিম পাতা খাবেন না। কারণ এতে লাভের চেয়ে ক্ষতির দিকই বেশি।
আবার ত্বকে নিমপাতা ব্যবহারে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিলে ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
চিকিৎসকরা বলছেন, নিম পাতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপকারী হলেও গর্ভবতী নারী কিংবা বিবাহিত নারী ও পুরুষ যারা সন্তান চাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে এটি জীবনে ক্ষতিই ডেকে আনতে পারে। কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম পাতা গর্ভপাতের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই বিবাহিতরা কখনও ভুলেও নিম পাতা খাবেন না।
আপন দেশ/মাসুম