ছবি : সংগৃহীত
এখর আর আগের মত শৈশব বলতে খেলাধুলা করা বিকেল নেই। এখন শিশুরা ঘরমুখো জীবনযাপনে বেশি অভ্যস্ত। শিশুদের আসক্তি এখন ইন্টারনেটেই বেশি। অনেকে গেমস খেলায় আসক্ত। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আপডেট থাকতে চায়। এতে করে শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি ব্যাপক হারে বেড়ে যাচ্ছে। যা শিশুদের জন্য অনেকটা ক্ষতিকরও বটে। শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি কেন ক্ষতিকর এবং কীভাবে এ আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করবেন তা নিয়েই আজকের ফিচার।
স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তি থেকে কী কী ক্ষতি হতে পারে?
সাম্প্রতিক একটি ঘটনা বলি। ভারতে সম্প্রতি নয় বছর বয়সি এক শিশু বাবা-মা স্মার্টফোন দিতে অস্বীকার করায় ছুরি দিয়ে নিজেই নিজের শরীরে আঘাত করে। আশা করি এ ঘটনা থেকেই বুঝতে পারছেন এ আসক্তি শিশুদের জন্য কতটা ক্ষতিকর।
স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তি থেকে আরো যেসব সমস্যা হয়:
অমনোযোগীতা
শ্রবনশক্তি হ্রাস পাওয়া
চোখের দ্যুতি কমে যাওয়া
স্পিচ ডিসওর্ডার
অটিজম
শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি কীভাবে কমানো যায়?
স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তির কারণ কী?
১) ইন্টারনেটে বর্তমানে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ তৈরি হচ্ছে। যার ফলে শিশুরা সহজেই বিভিন্ন ডিভাইস পরিচালনায় পারদর্শী হয়ে উঠছে।
২) কোনো কোনো ক্ষেত্রে একাকিত্বই আমাদের সন্তানদের গ্যাজেটের ওপর নির্ভরশীল করে তুলছে।
৩) কিন্তু বড় বড় শহরগুলোতে খেলার মাঠ না থাকাটাও এর পেছনে অনেকাংশে দায়ি।
৪) সন্তানের এ ধরনের আসক্তির জন্য তাদের বাবা-মায়েরাও দায়ী। শিশুরা তাদের পিতা-মাতার কাছ থেকেই এ অভ্যাসগুলো পায়। যাদের পিতামাতা ক্রমাগত ফোনে ব্যস্ত থাকে অথবা অফিস থেকে ফিরে ক্লান্তির কারণে শিশুকে ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না। তখন তারা শিশুকে ব্যস্ত রাখতে নিজেরাই তাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেন।
এ সমস্যার প্রতিকার কী?
স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তি যেহেতু একদিনে হয়না, তাই রাতারাতি এটি দূর করা যাবে না। এ আসক্তি দূর করে অভিভাবকেরা যা করতে পারেন-
১.পারিবারিক ভাবে গুণগত সময় কাটান। যেমনঃ একসাথে খাবার খাওয়া, গল্প করা, ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি।
২.বাচ্চাকে সময়ানুবর্তী হতে শেখান। সময়ের মূল্য ছোট থেকে বুঝতে শিখলে স্মার্টফোন চালিয়ে তারা আর সময়ের অপচয় করবে না।
৩.শিশুর জন্য সময় বের করুন। জীবনে ব্যস্ততা থাকবেই, কিন্তু তাই বলে নিজের সন্তানকে সময় দিতে ভুলে যাবেন না।
৪.বেশি বেশি বই পড়া উৎসাহিত করুন। আপনার সন্তানের বয়স অনুযায়ী তাকে বই কিনে দিন। আশেপাশে কোনো লাইব্রেরি থাকলে সেখানেও নিয়ে যেতে পারেন।
শিশুকে সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করুন
৫. ছবি আঁকা, নাচ, গান, ক্রাফটিং ইত্যাদি সৃজনশীল কাজে শিশুকে উৎসাহ দিন।
৬. আপনার সন্তানদের কিছু জীবন-দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচিতে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন।
৭. নিবিড়ভাবে সন্তানের সমস্যাগুলো জানুন এবং তার জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ নিশ্চিত করুন।
৮. শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে দিন।
সর্বোপরি, বাবা-মা হিসেবে যে ভূমিকা আপনাদের পালন করার কথা তা সঠিকভাবে পালন করুন। যেহেতু প্রযুক্তি মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং তা থেকে পিছিয়ে থাকারও উপায় নেই তাই এক্ষেত্রে সচেতনভাবে এবং ইতিবাচক দিকগুলো ব্যবহার করতে হবে।
আপন দেশ/জেডআই